ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সাড়ে ৫ হাজার জেলের কারাদণ্ড, জরিমানা ৯১ লাখ

চলতি বছর ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ সময় পাঁচ হাজার ৫৩৩ জেলেকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি আদায় করা হয়েছে ৯১ লাখ জরিমানা। আজ শনিবার (৭ নভেম্বর) মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন উপলক্ষে মৎস্য অধিদপ্তরে স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর অভিযান বাস্তবায়নের ২২ দিন দেশের ৮ বিভাগে দুই হাজার ৬৪০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ১৯ হাজার ৮১৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

অভিযানে ২৪৩ কোটি ৩৬ লাখ চার হাজার টাকা মূল্যের ১২ কোটি ৯১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কারেন্ট জালসহ দুই হাজার ৬৮৫টি অন্য অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে। এ সময় অবৈধভাবে মৎস্য আহরণের কারণে মৎস্য আইনের আওতায় পাঁচ হাজার ৫৩৩ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল দেওয়া হয়েছে এবং ৯০ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া মামলা করা হয়েছে ৬ হাজার ৯০৪টি। এ সময় অবৈধভাবে আহরিত ৪৫.৪১ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে। নৌকা ও জাল নিলামে সরকারের আয় হয়েছে ১৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের দিকনির্দেশনায় ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের তত্ত্বাবধানে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন ইলিশ সম্পৃক্ত ৩৬ জেলার জেলা প্রশাসক, ১৫২ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নৌপুলিশ, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী, র‌্যাব, বিজিবিসহ স্বেচ্ছাসেবী নানা সংগঠন ও ব্যক্তিরা।

অভিযানের প্রথম দিন ১৪ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষায় জেলে ও মৎস্যজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করতে নৌপথে অভিযানে অংশ নিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মন্ত্রীর সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদসহ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অভিযানে অংশ নেন।

এছাড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত বিভিন্ন জেলায় মাঠ পর্যায়ের অভিযানে অংশ নিয়েছেন। অভিযান সফল করতে মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তর গঠিত একাধিক তদারকি টিম মাঠে কাজ করেছে।

এ বছর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মা ইলিশ রক্ষায় আকাশপথে হেলিকপ্টার দিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী অভিযান পরিচালনা করে বিমান বাহিনী। তাছাড়া নৌপুলিশ, পুলিশ, বিমান বাহিনী, নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে একাধিক যৌথ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। এ ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় ছিল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।