১২ কোটি টাকা ফি: আইনজীবীর বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট
ঊচ্চ আদালত

‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ বিষয়ে রিভিউ শুনানি ১১ জুলাই

আদালতের রায়ে ‘যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এমন অভিমত দিয়ে আপিল আদালতের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা এক আসামির আবেদনের শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রিভিউ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আদালতের বন্ধু (অ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন। এ সময় আসামির রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস-এর পক্ষে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের যুক্তি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘যদি কারো যাবজ্জীবন সাজা হয় আর কিছুদিন পর মুক্তি পান তাহলে সমাজে অপরাধ করার প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। তবে সরকার চাইলে কাউকে রেয়াত দিতে পারেন।’

গত ১১ এপ্রিল ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড’ এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কিনা, সে বিষয়ে আইনি মতামত তুলে ধরতে চার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত।

এই চার আইনজীবীরা হলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, আবদুর রেজাক খান ও মুনসুরুল হক চৌধুরী।

মুনসুরুল হক চৌধুরী আসামিপক্ষের আইনজীবী হওয়ায় তিনি অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আপত্তি জানালে তার পরিবর্তে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিনকে সংযুক্ত করা হয়।

২০০১ সালে গাজীপুরে জামান নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার মামলার চূড়ান্ত রায়ে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ সর্বোচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ আসে। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম গাজীপুর মডেল থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। দ্রুত বিচার আদালত ২০০৩ সালে এ মামলার রায়ে তিন আসামি আনোয়ার হোসেন, আতাউর রহমান ও কামরুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। হাইকোর্টেও সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল থাকে।

এরপর আসামি আনোয়ার ও আতাউর সাজা কমানোর জন‌্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। কামরুল পলাতক থাকায় আপিলের সুযোগ পাননি। দুই আসামির আপিল শুনানি করে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ, যা আমৃত্যু কারাবাস হিসেবে গণ্য হবে। ওই বছরের ২৪ এপ্রিল আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, দণ্ডবিধির ৫৩ ধারা ও ৪৫ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে আমৃত্যু কারাবাস। এর ফলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত সবাইকে আমৃত্যু কারাগারে থাকতে হবে বলে ওই সময় জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে আপিল বিভাগের দেয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামি আতাউর মৃধা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন, যা বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য ওঠে।