সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এই তরুণ সদস্য নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বড় দাবিদার। তার ভাষ্য, তরুণদের এগিয়ে নিতে সংসদ সদস্য হতে চান সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা।
রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলার বিভিন্ন অঙ্গনে তার রয়েছে পদচারণ। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সদস্য তিনি। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিশ্লেষণমূলক বেশ কয়েকটি বই কয়েকটি বই রয়েছে তার। নির্বাচন কেন্দ্রিক টকশোগুলোতে তাকে দেখা যায় প্রায়ই।
গণমাধ্যমের সঙ্গে তার আলাপচারিতায় রিয়াজুল কবীর কাওছার জানান, তিনি নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসন থেকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। এ জন্য তিনি এলাকায় কাজ করছেন, নিয়মিত যাচ্ছেন এলাকায়।
আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিবারে আমার জন্ম। স্কুলজীবন থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শহীদুল্লাহ হলের নির্বাচিত পাঠকক্ষ সম্পাদক ছিলাম। এরপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির কার্যকরী সদস্য।’
আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে কী কাজ করছেন জানতে চাইলে রিয়াজুল কবির বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত এলাকায় যাচ্ছি। আমার সংসদীয় আসনের প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রাম, পাড়ামহল্লা আমার পরিচিত। এলাকার প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেছি।’
নিজেদের পারিবারিক ঐতিহ্য তার জন্য নির্বাচনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। ‘আমার নানা আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া ১৯৫৪, ৭০, ৭৩ ও ৭৯ সালে নির্বাচন করেছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান আমার নানির ছোট ভাই। বাবা ডা. মোহাম্মদ রোস্তম আলীও রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবেই সারা জীবন মানুষের সেবা করে গেছেন তিনি। আমার ভাইয়েরাও সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পারিবারিক এই ঐতিহ্য আমার নির্বাচনে জিততে সহায়ক হবে।’
এর আগে কখনো নিজে প্রার্থী না হলেও নির্বাচনী অভিজ্ঞতা রয়েছে রিয়াজুল কবির কাওছারের। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নরসিংদী-৫ রায়পুরা নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন তিনি।
ফলে নির্বাচনী মাঠের কৌশল পরিচালনা সম্পর্কে তার বেশ দখল রয়েছে বলে মনে করেন রিয়াজুল। এ ছাড়া এলাকার সঙ্গে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। তরুণ প্রজন্মের প্রতি রয়েছে তার বিশেষ আগ্রহ। রিয়াজুল কবির বলেন, ‘এলাকার প্রতিটি উন্নয়মূলক কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখার চেষ্টা করেছি। আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি জায়গায় আমার পদচারণ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক রয়েছে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে। তরুণদের এগিয়ে নিতেই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাই।’
ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ করা কাওছার ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেন্দীয় উপকমিটির যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সহসম্পাদক, ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচারবিষয়ক উপকমিটির সদস্য, আওয়ামী লীগের জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন সমন্বয় সংক্রান্ত কমিটির সদস্য। ২০১২ সাল থেকে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক। ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন তিনি।
নিজের পারিবারিক ঐতিহ্যের পাশাপাশি রায়পুরায় আওয়ামী লীগের শক্তিশালী অবস্থান তার জয় নিশ্চিত করবে বলে মনে করেন এই মনোনয়নপ্রত্যাশী। এলাকার মানুষের মতে, এখানে আওয়ামী লীগের যেই প্রার্থী হোক তার জয় কোনো কঠিন বিষয় না। উপজেলা চেয়ারম্যান মিজান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রায়পুর আসনটা আওয়ামী লীগের। এখানে যাকেই প্রার্থী করা হোক তিনিই বিজয়ী হবেন।’
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রিয়াজুল কবির কাওছার সাহেব এলাকায় আসেন। এলাকার লোকজনও তাকে ভালো হিসেবে চেনেন। তবে আগামী নির্বাচনে রায়পুরা-৫ বা নরসিংদীর কোন আসন থেকে কে নির্বাচন করবেন তা এখনো দলীয়ভাবে ঠিক হয়নি। নেত্রী যাকে প্রার্থী করবেন তিনিই প্রার্থী হবেন।
মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদ বলেন, ‘নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সবাই এলাকায় আসছেন। এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছারও প্রায় নিয়মিত এলাকায় আসেন।
চানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, নিয়মিত এলাকায় আসেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম