আইন কোষ
আইন কোষ (প্রতীকী ছবি)

Will: উইল

আবদুল হামিদ: মুসলিম আইনানুসারে, অতঃপর বর্ণিত শর্তাবলী সাপেক্ষে সুস্থমনা নাবালক নহে এরূপ প্রত্যেক মুসলমান উইল করিয়া তাহার সম্পত্তি হস্তান্তর করিতে পারে। কোনো মুসলমান তাহার দাফন-কাফন এর ব্যয় এবং দেনা পরিশোধের পর উদ্বৃত্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের বেশি উইল করিয়া হস্তান্তর করিতে পারে না। এক তৃতীয়াংশের বেশি উইল করা হইলে এবং ওয়ারিশগণ সম্পত্তি প্রদান না করিলে এক তৃতীয়াংশের অধিক সম্পত্তির উইল কার্যকরী হইবে না, কোনো ওয়ারিশের অনুকূলে উইল করা আইনসংগত হইবে না। যদি উইলকারী মৃত্যুর পর তাহার অন্যান্য ওয়ারিশ উহাতে সম্মতি না দেয়।

গর্ভস্থ সন্তানের অনুকূলে উইল যায় যদি উইল করার ছয় মাসের মধ্যে তাহার জন্ম হয়।

১৯২৫ সালের উত্তরাধিকারী আইনে ২ (এইচ) ধারার সংজ্ঞানুসারে কোনো হিন্দু জীবদ্দশায় (তাহার মৃত্যুর পর) যাবতীয় সম্পত্তির কিভাবে বিলি ব্যবস্থা হইবে তাহা যদি কোনো লিখিত দলিল দ্বারা নিরূপণ করিয়া যায় তবে তাহাকে উইল বলে।

উত্তরাধিকারিত্ব আইনানুসারে একজন সুস্থমস্তিষ্ক সাবালক ব্যক্তি তাহার যাবতীয় পৃথক অথবা নিজ উপার্জিত সম্পত্তি অন্যের বরাবর উইল করিয়া দিতে পারে, তবে দানের ন্যায় উইলদাতা যে ব্যক্তিদের ভরণপোষণ দিতে আইনত বাধ্য ছিল তাহাদের জন্য ভরণপোষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা করিয়া বাকী সম্পত্তি উইল করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা

১.  একজন বিবাহিত রমণী তার উপার্জিত সম্পত্তি উইল করিতে পারেন।

২.  অন্ধ, বোবা ও বধির ব্যক্তির উইলের মর্ম অবগত হইতে পারিলেও উইল করিতে পারিবে না।

৩.  সাময়িকভাবে অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তি যখন সুস্থমনা থাকেন তখন তিনি উইল করিতে পারেন।

৪.  উইলের মর্ম চিররুগ্ন বা অসুস্থতার কারণে অবগত হইতে অপারগ হইলে তিনি উইল করিতে পারিবেন না। উত্তরাধিকারিত্ব আইনের বিধান অনুসারে উইল প্রতারণা, বলপ্রয়োগের দ্বারা করা হইলে তাহা বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। উইলকারী যে কোনো উইল রদ ও পরিবর্তন করিতে পারে এবং সর্বশেষ উইল কার্যকরী বলিয়া গণ্য হইবে।

উত্তরাধিকারিত্ব আইনানুসারে উইলটি অবশ্যই লিখিত দলিল দ্বারা হইতে হইবে এবং উইলদাতা কমপক্ষে দুইজন সাক্ষীর সম্মুখে দলিলের সমস্ত বিষয় অবগত হইয়া উহাতে স্বাক্ষর করিবেন। দুইজন বা তার অধিক প্রত্যয়নকারী হিসাবে উইলে স্বাক্ষর করিবেন।

অজ্ঞাত ব্যক্তির অনুকূলে উইল করিতে হইলে সীমিত স্বত্ব সৃষ্টি করিয়া তার মাধ্যমে উইল করা যায়; এই ধরনের হস্তান্তরের বিধান সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১৩, ১৪, ১৬ ধারায় বর্ণনা করা হইয়াছে।

উইল প্রবেটের জন্য জেলা জজ আদালতে দরখাস্ত করিতে হয়।

লেখক: জেলা ও দায়রা জজ