মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লা ইয়ামিনকে অপসারণে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত চেষ্টা করছে। রোববার দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতাকে মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া আদেশ না মানায় বর্তমান প্রেসিডেন্টকে অপসারণের চেষ্টা শুরু হয়েছে।
আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনিল বলেছেন, গভীর সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে মালদ্বীপ। টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় তার সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
মালদ্বীপের এই অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের আদেশ জারি করতে পারেন বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমি সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়েছি যে, এ ধরনের একটি অবৈধ আদেশ মানা উচিত হবে না তাদের।’
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ নয়জন প্রভাবশালী রাজনীতিকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির মামলা চলছে। গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বিরোধীদলীয় এ নেতাদের মুক্তির আদেন দেন।
কিন্তু ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লা ইয়ামিনের প্রশাসন আদালতের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায় দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিতে আদালতের সিদ্ধান্তের পর রাজধানী মালেতে বিরোধীদলীয় সর্মথকরা উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে অান্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও স্বস্তি প্রকাশ করে।
শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুটেরাস মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে বিরোধীদলীয় নেতাদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান।
সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে গুটেরাস মালদ্বীপের সব দলের অংশগ্রহণে রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘ সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি।
তবে আদালতের আদেশের পর শনিবার প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। রাজধানী মালেতে তিনি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের মানুষের এ কঠিন সময়ে পালিয়ে থাকার মতো মানুষ নন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন।
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে সময়ের প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের তিনদিনের মাথায় প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন দেশটির পুলিশের দ্বিতীয় প্রধান কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন। এছাড়া সোমবার থেকে পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরুর কথা থাকলেও তা বাতিল করে দেন তিনি।
রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল অনিল বলেছেন, রাজধানী মালেতে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তিনি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর প্রধান আহমেদ শিয়াম বলেছেন, মালদ্বীপ সঙ্কটে পড়বে আর তা দেখে বসে থাকবে না নিরাপত্তাবাহিনী।
তিনি বলেন, আমরা অ্যাটর্নি জেনারেল বৈধ আদেশ অনুস্মরণ করবো এবং বেআইনি কোনো নির্দেশ মানতে বাধ্য হবো না। সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম