রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় প্রায় আট বছর আগে সংঘটিত জোড়া খুনের মামলায় দুজনকে ফাঁসি ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সর্দার এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কাওসার মোল্লা ও ফরহাদ গাজি। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন সুরজ মিয়া ও সুপর্ণা।
এঁদের মধ্যে কাওসার, ফরহাদ ও সুপর্ণা পলাতক। সুরজ মিয়া কারাগারে আছেন। আজ আদালতে সুরজ মিয়াকে হাজির করা হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২০ আগস্ট জাকিউর রহমান জুয়েল ও তাঁর বন্ধু সবুজ মিয়াকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যান সুপর্ণা। সুপর্ণার সঙ্গে সবুজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে এই দুজনকে উত্তরখান এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত জাকিউর রহমানের বাবা মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ২০১০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এই চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করে সুরজ মিয়াসহ দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল কাদের পাটোয়ারি গণমাধ্যমকে বলেন, সবুজের সঙ্গে সুপর্ণার সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে তাঁর ভাই ফরহাদ গাজি সুপর্ণাকে দিয়ে কৌশলে দুজনকে ডেকে আনান। এরপর ফ্রুটিকা জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁদের খাওয়ানো হয়। ওষুধের প্রভাবে দুজন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে কাওসার মোল্লা ও ফরহাদ গাজি তাঁদের গলা কেটে হত্যা করেন। ২০১১ সালের ৩ জুন এই চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১৮ জুলাই এই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আদালত রায়ে বলেছেন, বর্তমান সমাজে প্রেমঘটিত কারণে অপহরণের পর হত্যা ও গুমের মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাতার জন্য এই ধরনের অপরাধের যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি। এমন অপরাধের কারণে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে নির্মম, নৃশংস ও ভয়ংকর অগ্রহণযোগ্য হত্যাসহ এ–জাতীয় অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব না।