মহাকাশে গিয়েছি, সুবিচারও নিশ্চিত করতে পারব: বিচারপতি ইমান আলী

 

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইমান আলী জেলা জজদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। ধনীর জন্য আইন প্রয়োগ হলে গরিবের জন্য কেন হবে না? শুধু নিয়ম-কানুন না জানার অভাবে অনেকে জামিনযোগ্য মামলায়ও কারাগারে আছেন।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আজকে মহাকাশে গিয়েছি। সুতরাং আমরা সুবিচারও নিশ্চিত করতে পারব।

সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে শনিবার লিগ্যাল এইড সুপ্রিম কোর্ট শাখার আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিচারপতি ইমান আলী বলেন, ‘সব নাগরিক যদি সমান হয় যারা গরিব, দুঃখী তাদের জন্য কেন আইনের প্রয়োগ হবে না।’ তারা (গরিব) কেন বঞ্চিত হবেন। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ এই বিচারপতি বলেন, আমাদের সবার একটি দায়িত্ব আছে, আসামির সাজা যদি হয় খাটতে হবে। তবে, কেউ যেন একদিন বেশি না খাটেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে আমরা দেখতাম জেল আপিলের শুনানিই হতো না। হাইকোর্টে আমরা যখন ছিলাম ভাগ করে চেম্বারে বসে নথি দেখে রায় দিতাম।’ ‘আমি দুঃখিত, বলতে হচ্ছে, আপনারা আইন মানছেন না। আইনের প্রবিধান করা হয়েছে ন্যায় বিচারের জন্য। সেই আইন যদি আপনারা না মানেন তা হলে কী করার। আইনের প্রয়োগ করা সাংবিধানিক অধিকার।’

বিচারপতি ইমান আলী বলেন, জেল আপিল মামলা এমনভাবে পরিচালনা করা উচিত যাতে আসামিরা ন্যায়বিচার পায়। আসামি গরিব বলে তার মামলার পেপারবুক হবে না, ফাইল তৈরি হবে না, মামলা নিষ্পত্তি হবে না, এভাবে চলতে দেয়া যায় না।

ভারপ্রাপ্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান বলেন, কারাগার জেল আপিল শাখা, জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও আইনজীবীদের মধ্যে সমন্বয় ও জবাবদিহিতা নিয়ে আসতে হবে। তাহলে জেল আপিলের নিষ্পত্তিতে আরও গতি আসবে।

সুপ্রিমকোর্ট বারের সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, যাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই, তাদের লিগ্যাল এইডের মামলা পরিচালনা করা উচিত নয়। কারণ এতে আসামি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী, অতিরিক্ত কারা মহা-পরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান ও জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. জাফরোল হাছান।

এ সময় বিভিন্ন জেলার জেলা ও দায়রা জজ, বিভিন্ন জেলার সিনিয়র জেল সুপাররা, সুপ্রিম কোর্টের প্যানেল আইনজীবীরা, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তারা, মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।