ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র বিদেশি পতাকার ব্যবহার বন্ধে উচ্চ আদালতে করা এক মুক্তিযোদ্ধার রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
সুর্নিদিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে রিটটি দাখিল না করায় মঙ্গলবার (৫ জুন) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি শাহিদুল করিম রিটটি খারিজ করে দেন। গাইবান্ধার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নুরুল আমিন গত ২৭ মে এই রিট করেন।
তারপর দিন বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চে রিটটি খারিজ হওয়ার পর রিটকারী অন্য বেঞ্চে আবার রিট করার কথা জানিয়েছিলেন। এবার ৪ জুন করা এই রিটটিও খারিজ হয়ে গেল।
রিটকারীর আইনজীবী আব্দুল হালিম গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্বকাপের সময় বিদেশী পতাকা উড়ানোর আইনি বাধা আর রইল না।
এর আগে, বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ রিট ফেরত পাঠানোর সময় বলেন, ‘এ সংক্রান্ত ইতিপূর্বে হাইকোর্টের রায় রয়েছে। তাই আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয়।’
নুরুল আমিনের করা রিটে বলা হয়, আগামী ১৪ জুন ২০১৮ তারিখ থেকে রাশিয়ায় ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অতীতে দেখা গেছে, ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের বাংলাদেশি সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি পতাকা উত্তোলন করেন। বিশেষত আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি ইত্যাদি দেশের বড় বড় পতাকায় সারা বাংলাদেশ ছেয়ে যায়। অথচ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা, ১৯৭২-এর বিধান অনুযায়ী, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলো ছাড়া অন্য কোনো স্থানে অন্য রাষ্ট্রের পতাকা উত্তোলন করতে হলে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। সেই বিধান লঙ্ঘন করে ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালে নির্বিচারে দেশব্যাপী বিদেশি পতাকা উত্তোলন করা হয়। এবারের বিশ্বকাপ উপলক্ষেও এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
আর্জিতে আরো বলা হয়, রিটকারী একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকার জন্য তিনি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন। বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালার এমন প্রকাশ্য ও নির্বিচার লঙ্ঘন দেখে রিটকারী অত্যন্ত ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হন। এমতাবস্থায় আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপ বা অন্য কোনো উপলক্ষে বাংলাদেশে সরকারের বিনা অনুমোদনে কোনো প্রকার বিদেশি পতাকা উত্তোলন নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র সচিবকে একটি নির্দেশনা জারির আবেদন জানানো হয়েছে।