বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদার সাজা বেড়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন আপিল বিভাগ। মামলার অপর আসামিদের পূর্বের ১০ বছর সাজা বহাল রয়েছে।

সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির আপিল খারিজ করেছেন আদালত।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাষ্ট্র, দুদক ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষ করা হয়। পরে মামলার রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত। সোমবার আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। তবে খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওইদিন বিকেলে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে খালেদা জিয়া এই সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান বলেন, খালেদা জিয়ার করা আপিলসহ তিন আসামির আপিল ও দুদকের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদনের ওপর ৩২ দিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট মঙ্গলবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এ অর্থদণ্ডের টাকা প্রত্যেককে সম অঙ্কে প্রদান করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়।

কারা ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া। কারাগারে থাকা অপর আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ পৃথক আপিল করেন। আর খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদক একটি আবেদন করে, যার ওপর শুনানি নিয়ে ২৮ মার্চ আদালত রুল দেন। এই পৃথক তিনটি আপিল ও দুদকের আবেদন ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।

আপিলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সাজা বাতিল করে তাকে খালাস দেয়ার আরজি জানিয়েছেন। দুদকের আইনজীবী শুনানিতে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি করে যাবজ্জীবন চেয়েছেন। আর বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা বহালের আরজি জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এর আগে আদালতে খালেদার আপিলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও আবদুর রেজাক খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। কাজী সালিমুল হকের পক্ষে আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ শুনানিতে অংশ নেন।

এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সোমবার খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর অস্থায়ী বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।