আয়কর মেলা

চলছে নবম আয়কর মেলা, গ্রাহকদের জন্য ১২ সুবিধা, ব্যাপক সাড়া

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নবম বারের মতো সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলায় গ্রাহকদের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। আর এতে কর্তৃপক্ষ বলছে, মেলায় অন্তত ১২ সুবিধা রাখার জন্য অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বেশি কর জমা পড়ছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টায় রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে শুরু হওয়া মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। আর শেষ হবে ১৯ নভেম্বর বিকেল ৫টায়।

এবারের মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইন সেবা গ্রহণের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য আলাদা বুথসহ ১১ ধরনের সুবিধা রাখা হয়েছে।

এগুলো হচ্ছে- ঢাকাসহ সারাদেশে ২০১৮-২০১৯ কর বর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারা। ঢাকার মেলা থেকে সব বিভাগের মানুষের জন্য আলাদা আলাদা বুথের ব্যবস্থা। এছাড়া একটি বুথে করদাতাদের ই-টিআইন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশন করানো হচ্ছে।

সেইসঙ্গে এনবিআরের ই-পেমেন্ট ওয়েবসাইটে (www.nbrepayment.gov.bd) অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য আলাদা করে বুথ রাখা।

মেলায় সোনালী, জনতা ও বেসিক ব্যাংকের শাখা খোলা আছে, যাতে করদাতারা আয়কর জমা দিচ্ছেন। সঞ্চয় অধিদফতরের জন্য আলাদা বুথ রয়েছে। সেখান থেকে করদাতারা সঞ্চয়ের যেকোনো তথ্য জানতে পারছেন।

আয়কর রিটার্ন, ই-টিআইএন আবেদন ফরম এবং চালান ফরম ও করদাতাদের সুবিধার্থে হেল্প ডেস্ক, তথ্য কেন্দ্র ও আয়কর সংক্রান্ত বুথ রাখা হয়েছে। এসব বুথের মাধ্যমে করদাতাদের আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ, চালান ও পে-অর্ডার তৈরিসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

করদাতাদের সুবিধার্থে ৪৩টি আয়কর রিটার্ন বুথ, ৩১টি হেল্প ডেস্ক ও ব্যাংক বুথ (সোনালী ব্যাংক ১৩টি, জনতা ব্যাংক পাঁচটি এবং বেসিক ব্যাংক তিনটি) রয়েছে মেলায়। এছাড়া ই-পেমেন্টের জন্য তিনটি ও ই-ফাইলিংয়ের জন্য দু’টি আলাদা বুথ রাখা হয়েছে।

এছাড়াও তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য মেডিকেল বুথও রাখা হয়েছে। সবশেষ করদাতাদের সুবিধার জন্য মেলায় ফটোকপির ব্যবস্থাও নিশ্চিত রয়েছে।

এগুলোর পাশাপাশি মেলাতে যাতায়াতের সুবিধার জন্য প্রথমবারে মতো রাজধানীর টিএসসি, রামপুরা, বেইলি রোড, মতিঝিল, মিরপুর ও উত্তরা থেকে ১৫টি শাটল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ আয়কর দাতা সৃষ্টি ও কর সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য কর শিক্ষণ ফোরাম রাখা হয়েছে মেলাটিতে। শিক্ষার্থীদের কর সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পর আবার কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১০ জনকে পুরস্কৃতও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জিয়া উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, এসব সুবিধা নিশ্চিত করার কারণে গত বছরের প্রথম দিনের চেয়ে এবার প্রথমদিন ৪৩ শতাংশ বেশি মানুষ মেলায় এসেছেন। ৪৯ শতাংশ মানুষ বেশি কর দিয়েছেন।

জিয়া উদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, মেলায় নতুনরা বেশি উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তাদের মধ্যে কর দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে মেলার প্রথমদিন এক লাখ ১৩ হাজার ৬৯৯ জন সেবা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আয়কর দিয়েছেন ৪৬ হাজার ৪০১ জন। আর কর জমা হয়েছে ২১৮ কোটি ৪২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৮ টাকা।