দেশের অধস্তন আদালতগুলোয় থাকা অভিযোগ আমলে নেওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাগুলো সংশ্লিষ্ট আদালতগুলোকে ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা এক মামলায় এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানিতে আজ মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফজলুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।
আদালত বলেছেন, মাদক মামলায় দেখা যাচ্ছে, অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর সাক্ষী না আসায় বিচারপর্যায়ে গিয়েও সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে না। মাদক মামলা নিষ্পত্তিতে নিম্ন আদালতের সক্রিয়তা লক্ষ করা যাচ্ছে না। তদন্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়ে সাক্ষী আনলে, বিচারক ও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আন্তরিক থাকলে আমলে নেওয়ার পর এক দিনের মধ্যেই মামলার নিষ্পত্তি হওয়া সম্ভব।
হাইকোর্ট মামলার ধার্য তারিখে সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তৎপর থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। সাক্ষী উপস্থাপনে শিথিলতা দেখালে বা ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারকে (এসপি) অবহিত করতে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক মামলায় সাক্ষীর উপস্থিতি তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট ডিসি ও এসপিকেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এই আদেশের কপি আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; যাতে করে সংশ্লিষ্ট ডিসি, এসপি, বিচারকসহ সংশ্লিষ্টরা অবহিত হতে পারেন।
অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে মাদক মামলার নিষ্পত্তি না হলে কেন হয়নি, তা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারককে নিম্ন আদালত তদারকিতে থাকা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। মামলা পরিচালনায় পিপির গাফিলতি দেখা গেলে মাদক মামলার সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর মিজানুর রহমান বাড়ৈ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদারীপুরের রাজৈর থানায় মামলা করে পুলিশ। এই মামলায় দুই বছর আগে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলেও নেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সাক্ষী হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি—এমন যুক্তি দিয়ে মিজানুর রহমান হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এই জামিন আবেদনের শুনানিতে আদালত আজ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত মিজানুরকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি মাদারীপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।