গ্রেফতার কামরুন নাহার মনির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

নুসরাতের সহপাঠী কামরুন নাহার মনি ৫ দিনের রিমান্ডে

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় গ্রেফতার কামরুন নাহার মনির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ফেনীর কোর্ট পরিদর্শক গোলাম জিলানী জানান, সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি মনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে হাজির করে আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মনির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান কবির সাজু বলেন, আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কামরুন নাহার মনির কথা উঠে আসে। নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার জন্য বোরকা কিনে সরবরাহ করেছিলো সে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) দিনগত রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মনি সোনাগাজী বাসস্ট্যান্ডের ঈমান আলী হাজী বাড়ির মরহুম আজিজুল হকের পালিত মেয়ে। সে নুসরাতের সহপাঠীও।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।

পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায় নুসরাত।

শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি সিরাজ উদ-দৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ১৩ জন। এদের মধ্যে সিরাজ উদ-দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরা দু’জন নুসরাত হত্যা মামলার দুই নম্বর এবং তিন নম্বর আসামি।

বাকি আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এরা হলেন- সিরাজ উদদৌলা (৭ দিন), আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম (৫ দিন), জাবেদ হোসেন (৭ দিন), নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেন (৫ দিন রিমান্ড)।

এছাড়া, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় নুসরাতের সহপাঠী মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি ও জান্নাতুল আফরোজকে। এদের মধ্যে কামরুন নাহারকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকেও রিমান্ডে পাঠানো হলো বুধবার।

অন্যদিকে, শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) সোনাগাজী থানার সেসময়কার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।