বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণের টাকা কমানো ও কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের আরজি জানিয়ে গ্রিন লাইনের করা আবেদন শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, আপনারা (গ্রিন লাইন) যথেষ্ট বেয়াদবি করেছেন। আপনাদের আচরণ কোনোভাবেই শোভনীয় নয়।’
আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
শুনানিকালে আদালত বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের অর্থ হ্রাস করার কোনো সুযোগ নেই।’
গ্রিন লাইনের আইনজীবীকে আদালত বলেন, ‘আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করার কোনো ফন্দিফিকির করা হলে আপনাদের সরকার কীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে, তা আমরা দেখব। কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আপনারা যথেষ্ট বেয়াদবি করেছেন। আপনাদের আচরণ কোনোভাবেই শোভনীয় নয়।’
এ সময় পা হারানো রাসেল সরকারকে প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে কিস্তিতে বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে ওই অর্থ রাসেলকে দিয়ে ১৫ তারিখের মধ্যে আদালতে অর্থ পরিশোধবিষয়ক প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে গ্রিন লাইনের মালিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ওজি উল্লাহ। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম।
ক্রাচে ভর দিয়ে আজ আদালতে উপস্থিত হন রাসেল সরকার।
এর আগে গত ২২ মে হাইকোর্ট নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতির ওপর আদেশের জন্য আজকের (২৫ জুন) দিন ধার্য করেছিলেন।
রাসেলের পা হারানোর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনজীবী উম্মে কুলসুমের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট এক আদেশে দুই সপ্তাহের মধ্যে ভুক্তভোগীকে (রাসেল) ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রয়োজন হলে রাসেলের পায়ে অস্ত্রোপচার এবং কাটা পড়া বাঁ পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচ দিতে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।