মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হক

সাবেক এনএসআই মহাপরিচালক ওয়াহিদুলের বিচার শুরু

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের (৬৯) বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, মোখলেসুর রহমান বাদল, রেজিয়া সুলতানা চমন ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। আর আসামি ওয়াহিদুল হকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও সৈয়দ মিজানুর রহমান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের (ওপেনিং স্টেটম্যান্ট) জন্য ওই দিন ধার্য করা হয়েছে।

এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর বারিধারার বাসা থেকে ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ২৫ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আসামি ওয়াহিদুল হককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।

এ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর তদন্ত সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে তদন্তে তার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ পাওয়া যায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়। এ মামলায় মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ বিকেল অনুমান সাড়েটায় অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ওয়াহিদুল হক রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৯ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের অ্যাডজ্যুটেন্টের দায়িত্বে থেকে ৪টি সামরিক জিপে মেশিনগান লাগিয়ে গুলিবর্ষণ করে এবং রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ম এলাকায় ৫শ থেকে ৬শ স্বাধীনতাকামী বাঙােলেক হত্যা, গণহত্যা ও অসংখ্য মানুষকে গুরুতর আহত করে। গুলিবর্ষণ করে সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। হত্যা, গণহত্যার শিকার মানুষের লাশ পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে কয়েকটি গর্তে মাটি চাপা দেয়।