আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম: জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু। একই সঙ্গে ওই তালিকা স্থগিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসার বিষয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করেছে মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমি খুশি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আরও গভীরভাবে ধারণ করতে হবে। মন্ত্রণালয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা আছে কি না তা খুঁজে বের করার আহ্বান।

ট্রাইব্যুনাল থেকে যারা সাজা পেয়েছেন তাদের তালিকা, বীরাঙ্গনাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে আছে কি না, সে প্রশ্নও রাখেন তিনি। একইসঙ্গে বলেন, দায়িত্ব পালন করতে না পারলে সরে যাওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করে। তবে ওই তালিকায় এমন কিছু নাম আসে যা তালিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তেমনই একটি নাম গোলাম আরিফ টিপু; যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর ও ভাষাসৈনিক।

বঙ্গবন্ধুর স্বজন ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের হাতে নিহত শহীদ সেরনিয়াবাতের বাবা আব্দুল হাই সেরনিয়াবাতের নামও ছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ওই রাজাকারের তালিকায়।

রাজাকারের তালিকায় নাম ওঠে বঙ্গবন্ধুর সহপাঠী ও বন্ধু মজিবুল হকের। তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর ছিলেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ছিলেন মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতিও।

বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে দুঃখ প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ভুলের পরিমাণ বেশি হলে রাজাকারের তালিকা প্রত্যাহার করা হবে। আর ভুলের পরিমাণ কম হলে ভুলবশত যাদের নাম এ তালিকায় এসেছে, সেগুলো প্রত্যাহার করা হবে।

এরপর বুধবার বিতর্কের মুখে ওই তালিকা স্থগিত করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম ওঠার বিষয়টিকে রহস্যজনক বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তালিকা স্থগিতের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘যাচাই-বাছাই ছাড়াই তালিকাটি প্রকাশ করেছিলাম।’