দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল তা কোর্টে তোলা হবে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে আপিল বিভাগে জামিন আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পর দুই মাসের মাথায় আবারও জামিন আবেদন করছেন তাঁর আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগামীকাল আমরা জামিন আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করব।’ তাঁর আরেক আইনজীবী সগীর হোসেন বলেন, আদালতের দপ্তরে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। জামিন পেলে তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী আছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। বিএনপি শুরু থেকেই এ মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা বলে আসছে। জামিন পাওয়ার যোগ্য হলেও খালেদাকে সরকার জামিন দিচ্ছে না বলে বিএনপির অভিযোগ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। এই সাজা বাতিল চেয়ে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে গত বছরের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করেন। এ ছাড়া বিচারিক আদালতে থাকা মামলার নথি তলব করেন হাইকোর্ট। গত ২০ জুন মামলার নথি হাইকোর্টে আসার পর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আদালতে তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবীরা। গত ৩১ জুলাই জামিন আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে জামিন চেয়ে বিফল হয়ে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। এই জামিন আবেদনের শুনানিতে গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে জানাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বোর্ডের মেডিকেল রিপোর্ট ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। সেদিন (৫ ডিসেম্বর) মেডিকেল প্রতিবেদন জমা না পড়ায় শুনানি পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেন আদালত।
১২ ডিসেম্বরের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দিয়েছেন। তবে আদালত খালেদা জিয়ার সম্মতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসা দিতে বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
এদিকে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার সুপারিশ করতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করা হয়।