সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নব নির্বাচিত সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আজ ১০ এপ্রিল শুক্রবার তার নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে সমিতির সকল সদস্যদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা প্রদান করেন। সেখানে তিনি সমিতির কার্যকরী কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন সহ অন্যান্য পদে যারা আছেন সকলের সাথে ভিডিও কথোপকথনের ছবিও যুক্ত করেছেন। ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কম এর পাঠকদের সুবিধার্থে আমরা পুরো বার্তাটি এখানে তুলে ধরছি-
‘বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্যবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম।
আপনারা বিগত ১১-১২ মার্চ, ২০২০ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি’র ২০২০-২০২১ সালের কার্য নির্বাহী কমিটিতে আমাদেরকে নির্বাচিত করেছেন।
আমরা নির্বাচিত হওয়ার দু’দিনের মাথায় ১৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে সমিতির সম্মানিত সভাপতি, সিনিয়র এডভোকেট জনাব এ এম আমিন উদ্দিন এর নেতৃত্বে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে আমাদের এক বছরের কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করি। এ লক্ষ্যে আমরা কিছু হোমওয়ার্কও শুরু করি। যেটা আপনারা অনেকে লক্ষ্য করেছেন।
আপনারা সকলেই অবগত আছেন, গত ৫ই এপ্রিল, ২০২০ ইং তারিখে আমাদের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে, সরকারী ছুটি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ফলশ্রুতিতে এজিএম অনুষ্ঠিত না হওয়ায়, আমরা পূর্বের কমিটির কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারিনি। ইনশাল্লাহ, আমরা আগামী ১৩ এপ্রিল, ২০২০ ইং তারিখে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবো বলে আশা করছি।
তবে এই পরিস্থিতিতে, আমরা কিন্তু অলস বসে নেই। আমাদের নতুন কমিটি, আইনজীবীদের কল্যানে সমিতির পক্ষ থেকে এই পরিস্থিতিতে কি কি করা যায়, প্রতিনিয়ত সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। বারের বেশ ক’জন সাবেক সভাপতি/ সম্পাদক, অনেক বিজ্ঞ সিনিয়র ও জুনিয়র বন্ধুদের সঙ্গেও নানা পর্যায়ে পরামর্শ করেছি।
বস্তুত আমরা কেউই ভালো নেই। দীর্ঘদিন আদালতের অনির্ধারিত বন্ধ এবং দেশ কার্যত লক ডাউনে থাকায় পেশাজীবী হিসাবে আমরা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পতিত হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণ বন্ধুদের বিষয়টি আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করেছে বেশি।
এমন এক অস্বস্থিকর পরিস্থিতিতে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত কার্যকরী কমিটি অদ্য ১০ই এপ্রিল, ২০২০ ইং তারিখে এক অনানুষ্ঠানিক সভায় সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের কল্যাণে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যেগুলো আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে। সিদ্ধান্তসমূহ নিম্নরূপ:
১। সমিতির বিদ্যমান Benevolent Fund Loan Rules, 2001 মোতাবেক কোন বিজ্ঞ সদস্য শুধুমাত্র ‘চিকিৎসা সুবিধার’ জন্য তার জমাকৃত অর্থের ৯৫% ঋণ হিসাবে নিতে পারেন। আমরা এটিকে শিথীল করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি যে, একজন আইনজীবী তার জমাকৃত টাকার ৯৫% অথবা ২৫ হাজার টাকা, যে অংকটি কম, সে পর্যন্ত বিনা সুদে ঋন গ্রহন করতে পারবেন। তিনি তিন বছর পর্যন্ত সময় পাবেন এটি পরিশোধ করার জন্য।
২। আমরা জানি, Benevolent Fund এর এই সুবিধা অনেক নবীণ আইনজীবী পাবেন না। তাদের কথা বিবেচনা করে আমরা আপাতত ৫০ লক্ষ টাকার একটি আপদকালীন ফান্ড সৃষ্টির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। একজন বিজ্ঞ সদস্যের আবেদনক্রমে case to case বিবেচনায় এই ফান্ড থেকে তিন বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য সুদমুক্ত ঋণের আদলে অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
৩। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় আইনজীবীদের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ ও সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা চেয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে দাবি জানানো হবে।
৪। ভারত ও পাকিস্তানের আদলে Virtual Court চালুর জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
৫। সমিতির সামর্থ্যবান বিজ্ঞ সদস্যদের Voluntary contribution এর মাধ্যমে সত্বর একটি ‘করোনা উদ্ভূত আইনজীবী সহায়তা ফান্ড’ সৃষ্টিতে সচেষ্ট থাকবো এবং একজন বিজ্ঞ সদস্যের প্রয়োজন মাফিক এই ফান্ড থেকে অনুদান হিসাবে অর্থ প্রদান করা হবে।
বিজ্ঞ সদস্যবৃন্দ,
আপনারা আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমাদের মেয়াদকাল মাত্র এক বছর।
এই দু:সময়ে আমরা একে অপরের পাশে থাকবো এটা সকলেই প্রত্যাশা করি। তবে আমরা আমাদের কার্যক্রমে শতভাগ সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের পদক্ষেপসূহ বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্রহণ করা হয়েছে। সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের কল্যাণে ভবিষ্যতে বৃহত্তর যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আমরা আশা করছি, আমাদের গৃহীত বর্তমান পদক্ষেপসমুহ বিজ্ঞ সদস্যবৃন্দ সাদরে গ্রহণ করবেন।
ধন্যবাদান্তে,
একান্তভাবে আপনাদের।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির
কার্য নির্বাহী কমিটি, ২০২০-২১ এর পক্ষে,
মো: রুহুল কুদ্দুস (কাজল)
সম্পাদক (নির্বাচিত)