ব্যারিস্টার খন্দকার এম এস কাউসার

চাকরীচ্যুত হলে আপনার কিছু অধিকার

ব্যারিস্টার খন্দকার এম এস কাউসার: 

বিজিএমইএ এর প্রেসিডেন্ট ডঃ রুবানা হক বলেছেন, জুন মাস থেকে চাকরি থেকে ছাঁটাই শুরু হবে। এই রুঢ় সত্যটা মেনে নেয়াতে মঙ্গল। সিপিডি বলেছে প্রায় ৩০ শতাংশ চাকুরীজীবী চাকুরি হারাতে পারে। ভাটায় শামুক-ঝিনুক তো ভেসে যাবেই, আপনি কয়টা কুঁড়াতে পারলেন তা ই কথা। চাকরি হারানো থেকে বাঁচা, বা প্রাপ্য অধিকার কতটুকু পেলেন তা ই ব্যাপার। যদিও চাকরি হারানোর ব্যাথা আপনি ছাড়া কেউ বুঝবেনা, তবুও বলি, আপনার ভাগ্য তো আমেরিকার বিখ্যাত রেসলার সিএম পাঙ্ক এর মতো না যিনি তাঁর বিয়ের দিন কুরিয়ার সার্ভিস থেকে একটি চিঠি পান যা আসলে ছিল তাঁর চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিস। আপনি তো নিশ্চয় নেটফ্লিক্স এর প্রথম সিইও মার্ক রেন্ডলফ এর মতো শিষ্টাচারহীন ভাবে তাঁর প্রথম চাকরি থেকে বহিষ্কৃত হননি।  খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “ইউ আর ফায়ার্ড (আপনি চাকরি থেকে বরখাস্ত), এটা খুব শক্তিশালী (কষ্টদায়ক) একটা বাক্য”। জানি স্টিভ জবস এর মতো বলা সম্ভব না, “এপেল থেকে বের করে দেয়াতে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ কাজ করতে পেরেছি”, কারন আপনি তো আর স্টিভ জবস না, তবুও বলি, হারানো কে শক্তিতে রূপান্তরিত করুন। কথিত আছে প্রতিটা সিইও সারাক্ষণ তাঁর চাকরি হারানোর ভয়ে থাকেন। তাদের সাথে আপনার পার্থক্য হচ্ছে, প্রতিটা সিইও প্রতিদিন মারা যায়, আর আপনি বড়জোর একবার মারা গেছেন।

যাক, করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে চাকরীচ্যুত এবং বেকার বানাবে। যারা চাকরি হারাবেন, তাদের কিছু আইনি অধিকার আছে, যা সম্বন্ধে জানা তাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর আলোকে আপনাদের কিছু অধিকার সম্বন্ধীয় ধারা এবং বিধান এখানে দেয়া হল। এখানে আমার কোন সাহিত্যিক বা আইনি ক্যারিশমা নাই, আপনার প্রয়োজনীয় আইনের ধারাগুলো থেকে কিছু ধারা এখানে একত্রিত করেছিঃ

লে-অফকৃত শ্রমিকগণের ক্ষতিপূরণের অধিকার

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৬৷ (১) যে ক্ষেত্রে বদলী বা সাময়িক শ্রমিক নহেন এরূপ কোন শ্রমিককে, যাহার নাম কোন প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভুক্ত আছে এবং যিনি মালিকের অধীন অন্ততঃ এক বত্সর চাকুরী সম্পূর্ণ করিয়াছেন, লে-অফ করা হয়, তাহা হইলে মালিক তাহাকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত তাহার লে-অফের সকল দিনের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবেন৷

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অর্ন্তবর্তী মজুরী, যদি থাকে, এর অর্ধেক এবং তাহাকে লে-অফ করা না হইলে তিনি যে আবাসিক ভাতা পাইতেন, তাহার সম্পূর্ণের সমান৷

(৩) যে বদলী শ্রমিকের নাম কোন প্রতিষ্ঠানের মাস্টার-রোলের অন্তর্ভুক্ত আছে, তিনি এই ধারার প্রয়োজনে বদলী বলিয়া গণ্য হইবেন না যদি তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে এক বছর চাকুরী সম্পূর্র্র্ণ করিয়া থাকেন৷

(৪) মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে ভিন্নরূপ কোন চুক্তি না থাকিলে, কোন শ্রমিক এই ধারার অধীন কোন পঞ্জিকা বত্সরে পঁয়তাল্লিশ দিনের অধিক সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ পাইবেন না৷

(৫) উপ-ধারা (৪) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোন পঞ্জিকা বত্সরে কোন শ্রমিককে অবিচ্ছিন্নভাবে বা বিচ্ছিন্নভাবে পঁয়তাল্লিশ দিনের অধিক সময়ের জন্য লে-অফ করা হয়, এবং উক্ত পঁয়তাল্লিশ দিনের পর লে-অফের সময় যদি আরোও পনের দিন বা তদূর্ধ্ব হয়, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিককে, শ্রমিক এবং মালিকের মধ্যে ভিন্নরূপে কোন চুক্তি না থাকিলে, পরবর্তী প্রত্যেক পনের বা তদূর্ধ্ব দিনসমূহের লে-অফের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে৷

(৬) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরী, যদি থাকে, এর এক-চতুর্থাংশ এবং যদি আবাসিক ভাতা থাকে, তাহার সম্পূর্ণের সমান৷

(৭) কোন ক্ষেত্রে যদি কোন শ্রমিককে কোন পঞ্জিকা বত্সরে উপরে উল্লিখিত প্রথম পঁয়তাল্লিশ দিন লে-অফের পর কোন অবিচ্ছিন্ন পনের দিন বা তদূর্ধ্ব সময়ের জন্যে লে-অফ করিতে হয়, তাহা হইলে মালিক উক্ত শ্রমিককে লে-অফের পরিবর্তে ধারা ২০ এর অধীন ছাঁটাই করিতে পারিবেন৷ 

কতিপয় ক্ষেত্রে লে-অফকৃত শ্রমিকগণ ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবেন না

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৮৷ (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন লে-অফকৃত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে না, যদি-

(ক) তিনি একই প্রতিষ্ঠানে বা একই মালিকের অধীন একই শহরে বা গ্রামে অথবা আট কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত ভিন্ন কোন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতা বা পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নাই-এরূপ কোন বিকল্প পদে একই মজুরীতে কাজ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন;

(খ) তিনি মালিকের নির্দেশ সত্ত্বেও অন্ততঃ দিনে একবার প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কর্ম সময়ের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট সময়ে কাজের জন্য হাজিরা না দেন।

(২) উপ-ধারা (১) (খ) এর উদ্দেশ্যে, যদি লে-অফকৃত কোন শ্রমিক কোন দিনে স্বাভাবিক কর্ম সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কোন সময়ে কাজের জন্য হাজিরা দেন, এবং হাজিরার দুই ঘণ্টার মধ্যে যদি তাহাকে কোন কাজ দেওয়া না হয়, তাহা হইলে তিনি সেই দিনের জন্য এই ধারার অর্থ মোতাবেক লে-অফকৃত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিতরুপে যদি কোন লে-অফকৃত শ্রমিক কাজের জন্য হাজিরা দেন, এবং তাহাকে কোন দিনের কোন পালায় উহা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে কাজ দেওয়ার পরিবর্তে তাহাকে একই দিনে পালার দ্বিতীয়ার্ধে কাজে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তিনি তদনুযায়ী কাজের জন্য হাজিরা দেন, তাহা হইলে তিনি ঐ দিনের অর্ধেক কর্ম সময়ের জন্য লে-অফ হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং অবশিষ্ট অর্ধেক কর্মসময়ে, তাহাকে কোন কাজ দেওয়া হউক বা না হউক, তিনি চাকুরীতে ছিলেন বলিয়া বিবেচিত হইবেন।

 ছাঁটাই

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ২০। (১) কোন শ্রমিককে প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারণে কোন প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাইবে।

(২) কোন শ্রমিক যদি কোন মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অনূ্যন এক বৎসর চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিককে-

(ক) তাহার ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখ করিয়া এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা নোটিশ মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করিতে হইবে;

(খ) নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করিতে হইবে, এবং আরেকটি কপি প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধিকে, যদি থাকে, দিতে হইবে; এবং

(গ) তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ত্রিশ দিনের মজুরী বা গ্রাচু্যইটি যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ১৬(৭) এর অধীন ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (২) (ক) এর উল্লিখিত কোন নোটিশের প্রয়োজন হইবে না, তবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিককে উপ-ধারা (২) (গ) মোতাবেক প্রদেয় ক্ষতিপূরণ বা গ্রাচ্যুইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরোও পনের দিনের মজুরী দিতে হইবে।

(৪) যে ক্ষেত্রে কোন বিশেষ শ্রেণীর শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে, মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে এতদসংক্রান্ত কোন চুক্তির অবর্তমানে, মালিক উক্ত শ্রেণীর শ্রমিকগণের মধ্যে সর্বশেষে নিযুক্ত শ্রমিককে ছাঁটাই করিবেন।

বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধি ২৭ অনুযায়ী ছাঁটাইয়ের নোটিস। ধারা ২০ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ক) মোতাবেক শ্রমিককে প্রদত্ত ছাঁটাইয়ের নোটিশে  নিন্মে বর্ণিত তথ্যসমূহের উল্লেখ থাকিতে হইবে, যথা: প্রতিষ্ঠানের নাম; শ্রমিকের নাম, পদবি ও কার্ড নম্বর; ছাঁটাইয়ের কারণ; ছাঁটাই কার্যকর হইবার তারিখ; মোট চাকরিকাল; শ্রমিকের প্রাপ্যতা: নোটিস পে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে); (আ) গ্র্যাচুইটি বা ক্ষতিপূরণ; 

চাকুরী হইতে ডিসচার্জ

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ২২। (১) কোন শ্রমিককে, কোন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যয়িত, শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে চাকুরী হইতে ডিসচার্জ করা যাইবে।

(২) ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিক অনূ্যন এক বৎসর অবিচ্ছিন্ন চাকুরী সম্পূর্ণ করিলে তাহাকে মালিক তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ত্রিশ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচ্যুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন।

 বরখাস্ত, ইত্যাদি ব্যতীত অন্যভাবে মালিক কতৃর্ক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ২৬৷ (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোন পন্থা ছাড়াও মালিক-

(ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের তেগত্রে, একশত বিশ দিনের,

(খ) অন্য শ্রমিকের তেগত্রে, ষাট দিনের,

লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন৷

(২) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোন পন্থা ছাড়াও মালিক-

(ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে, ত্রিশ দিনের,

(খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে, চৌদ্দ দিনের,

লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া কোন অস্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন, যদি না এই অবসান যে অস্থায়ী কাজ সম্পাদনের জন্য শ্রমিককে নিযুক্ত করা হইয়াছে উহা সম্পূর্ণ হওয়া, বন্ধ হওয়া, বিলুপ্ত হওয়া বা পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে হয়৷

(৩) যে ক্ষেত্রে মালিক বিনা নোটিশে কোন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে চাহেন সে ক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন, প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরী প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন৷

(৪) যে ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয় সেক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বত্সরের চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ত্রিশ দিনের মজুরী, অথবা গ্রাচ্যুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে৷

নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিপর্যয় বা ক্ষতির কারণে মালিক শ্রমিক সম্পর্ক

1বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা [২৮ক। এই অধ্যায়ে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, আকষ্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মানুষের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিপর্যয় বা জরূরী প্রয়োজনে কোন শিল্প স্থানান্তর বা কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ হইলে সেই ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক, সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্ধারণ করিতে পারিবে।]

বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর বধিি ৩২ অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিপর্যয় বা ক্ষতির কারণে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক। ধারা ২৮ক অনুযায়ী মালিক ও শ্রমিক সম্পর্ক হইবে নিন্মরূপ, যথা: কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ হইবার ক্ষেত্রে: আকষ্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মানুষের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূতবপর্যয়ি বা জরুরি প্রয়োজনে মালিক কর্তৃক মহাপরিদর্শক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত রিদর্শককেপ (৩) তিন কর্মদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ফরম-১০ অনুযায়ী যাবতীয় তথ্যাদি অবহিত করিতে হইবে; (আ) মালিক শ্রমিকদেরকে ছাঁটাই করিবেন এবং আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধ করিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় চালু হইবার সম্ভাবনা থাকিলে মালিক কারখানা বা প্রতিষ্ঠান লে-অফ ঘোষণা করিতে পারিবেন ; কারখানা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হইবার সময় পর্যন্ত শ্রমিক পূর্ণ মজুরিতে কর্মরত ছিলেন বলিয়া গণ্য হইবেন; শ্রমিককে মালিক তাহার অধীন একই ধরনের অন্য প্রতিষ্ঠানে সমপদে কাজে নিয়োজিত করিতে চাহিলে দফা (খ)-তে বর্ণিত বিধান প্রযোজ্য হইবে; স্থায়ীভাবে বন্ধ না করিয়া মালিক ইচ্ছা করিলে ধারা ১২ মোতাবেক কাজ বন্ধ রাখিতে পারিবেন এবং সেই ক্ষেত্রে শ্রমিক ধারা ১৬ মোতাবেক লে-অফ বেনিফিট প্রাপ্য হইবেন;

শ্রমিকের চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধের মেয়াদ

৩০৷ অবসর, ডিসচার্জ, ছাঁটাই, বরখাস্ত এবং চাকুরীর অবসান ইত্যাদি যে কোন কারণে শ্রমিকের চাকুরীর ছেদ ঘটার পরবর্তী সর্বোচ্চ ত্রিশ কর্ম দিবসের মধ্যে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উক্ত শ্রমিকের প্রাপ্য সকল পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে৷

বাসস্থান হইতে উচ্ছেদ

৩২৷ (১) কোন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান হইলে, তাহা যে কোন প্রকারেই হউক না কেন, তিনি তাহার চাকুরীর অবসানের ষাট দিনের মধ্যে মালিক কর্তৃক তাহাকে বরাদ্দকৃত বাসস্থান ছাড়িয়া দিবেন৷

(২) উক্ত সময়ের মধ্যে বাসস্থান ছাড়িয়া না দিলে মালিক শ্রম আদালতে তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করিতে পারিবেন1[:

তবে শর্ত থাকে যে, শ্রমিকের সকল পাওনা পরিশোধ না করিয়া কোন শ্রমিককে বাসস্থান হইতে উচ্ছেদ করা যাইবে না।]

(৩) আদালত উভয় পক্ষকে শ্রবণ করিয়া মামলাটি সংতিগপ্তভাবে বিচার করিবে, এবং যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে শ্রমিককে বাসস্থানটি ছাড়িয়া দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে৷

(৪) আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাসস্থান ছাড়িয়া না দিলে শ্রমিককে উহা হইতে বলপূর্বক উচ্ছেদ করিবার জন্য প্রয়োজনবোধে আদালত কোন পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে পারিবে৷

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন আদালতের নির্দেশপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আদালতের আদেশের সারমর্ম এবং উহাতে তাহার প্রবেশের ইচ্ছা বাসস্থানে বসবাসরত ব্যক্তিগণকে অবহিত করিবেন, এবং বাসস্থান ছাড়িয়া দেওয়ার জন্য তাহাদিগকে অন্ততঃ ছয় ঘন্টা সময় দিবেন, এবং অতঃপর উহার দখল গ্রহণের জন্য বল প্রয়োগের পূর্বে উহাতে বসবাসকারী শিশুগণকে বাহির হইয়া আসার জন্য সম্ভাব্য সকল সুযোগ দিবেন৷

অভিযোগ পদ্ধতি

৩৩৷ (১) লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ অথবা অন্য যে কোন কারণে চাকুরীর অবসান হইয়াছে এরূপ শ্রমিকসহ যে কোন শ্রমিকের, এই অধ্যায়ের অধীন কোন বিষয় সম্পর্কে যদি কোন অভিযোগ থাকে এবং যদি তিনি তত্সম্পর্কে এই ধারার অধীন প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হন তাহা হইলে তিনি, অভিযোগের কারণ অবহিত হওয়ার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিত আকারে রেজিিস্ট্র ডাকযোগে মালিকের নিকট 1[প্রেরণ] করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি সরাসরি গ্রহণ করিয়া লিখিতভাবে প্রাপ্তি স্বীকার করেন, সেই ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিিস্ট্র ডাকযোগে না পাঠাইলেও চলিবে৷

(২) মালিক অভিযোগ প্রাপ্তির 2[ত্রিশ] দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে শুনানীর সুযোগ দিয়া তত্সম্পর্কে তাহার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে শ্রমিককে জানাইবেন৷

(৩) যদি মালিক উপ-ধারা (২) এর অধীন কোন সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হন, অথবা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক যদি উক্তরূপ সিদ্ধান্তে অসন্তষ্ট হন, তাহা হইলে তিনি উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে অথবা, ক্ষেত্রমত, মালিকের সিদ্ধান্তের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে লিখিতভাবে অভিযোগ পেশ করিতে পারিবেন৷

(৪) শ্রম আদালত অভিযোগ প্রাপ্তির পর উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিয়া অভিযোগটি সম্পর্কে তাহাদের বক্তব্য শ্রবণ করিবে এবং উহার বিবেচনায় মামলার অবস্থাধীনে যেরূপ আদেশ দেওয়া ন্যায়সঙ্গত সেরূপ আদেশ প্রদান করিবে৷

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা আদালত, অন্যান্য প্রতিকারের মধ্যে, অভিযোগকারীকে, বকেয়া মজুরীসহ বা ছাড়া, তাহার চাকুরীতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং কোন বরখাস্ত, অপসারণ বা ডিসচার্জের আদেশকে ধারা ২৩(২) এ উল্লিখিত কোন লঘুদণ্ডে পরিবর্তিত করিতে পারিবে৷

(৬) শ্রম আদালতের কোন আদেশ দ্বারা সংতগুব্ধ কোন ব্যক্তি আদেশের ত্রিশ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের নিকট আপীল দায়ের করিতে পারিবেন, এবং এই আপীলের উপর উহার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷

(৭) এই ধারার অধীন কোন অভিযোগ বা আপীল দায়েরের জন্য কোন কোর্ট-ফিস প্রদেয় হইবে না৷

(৮) এই ধারার অধীন কোন অভিযোগ এই আইনের অধীন কোন ফৌজদারী অভিযোগ বলিয়া গণ্য হইবে না৷

(৯) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২৬ এর অধীন প্রদত্ত চাকুরীর অবসানের আদেশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করা যাইবে না, যদি না অবসানের আদেশটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ করা হয়, অথবা যদি না তিনি উক্ত ধারার অধীন প্রাপ্য সুবিধা হইতে বঞ্চিত হন৷

মজুরী হইতে কর্তনযোগ্য বিষয়াদি

১২৫। (১) এই আইন দ্বারা অনুমোদিত কর্তনের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কোন ৰেত্রে কোন শ্রমিকের মজুরী হইতে কিছুই কর্তন করা যাইবে না।

(২) কেবলমাত্র এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন 1[শ্রমিকের মূল মজুরী] হইতে কর্তন করা যাইবে, এবং উক্তরূপ কর্তন কেবলমাত্র নিম্নলিখিত প্রকারের হইবে, যথাঃ-

(ক) ধারা ২৫ এর অধীন আরোপিত জরিমানা;

(খ) কর্তব্য কাজে অননুমোদিত অনুপস্থিতির জন্য কর্তন;

(গ) কোন শ্রমিকের হেফাজতে প্রদত্ত মালিকের কোন মালামালের ৰতি বা লোকসান, অথবা তিনি যে অর্থের জন্য হিসাব দিতে দায়ী সে অর্থ বিনষ্টির জন্য কর্তন, যদি উক্তরূপ ৰতি বা বিনষ্টির জন্য সরাসরি তাহার অবহেলা বা গাফিলতি দায়ী হয়;

(ঘ) মালিক কর্তৃক সরবরাহকৃত বাসস্থানের জন্য কর্তন;

(ঙ) চাকুরীর প্রয়োজনে ব্যবহৃত কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি ব্যতীত, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এবং মালিক কর্তৃক সরবরাহকৃত সুযোগ-সুবিধা ও সেবার জন্য কর্তন;

(চ) কোন অগ্রিম বা কর্জ আদায়ের জন্য কর্তন, অথবা কোন অতিরিক্ত মজুরী প্রদানের ক্ষেত্রে উহা সমন্বয়ের জন্য কর্তন;

(ছ) শ্রমিক কর্তৃক প্রদেয় আয়কর বাবদ কর্তন;

(জ) কোন আদালতের আদেশে কর্তন, অথবা উক্তরূপ কর্তনের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন কোন কর্তৃপক্ষের আদেশে কর্তন;

(ঝ) ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ (১৯২৫ সনের ১৯ নং আইন) প্রযোজ্য হয় এই রকম কোন ভবিষ্য তহবিল অথবা আয়কর আইন, ১৯৮৪ (১৯৮৪ সনের ৩৬ নং আইন) এ সংজ্ঞায়িত কোন স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল, অথবা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোন ভবিষ্য তহবিলে জন্য চাঁদা কর্তন অথবা উহা হইতে প্রদত্ত অগ্রিম আদায়ের জন্য কর্তন;

(ঞ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোন সমবায় সমিতিকে প্রদানের জন্য অথবা বাংলাদেশ ডাকবিভাগ অথবা সরকারী কোন বীমা কোমপানী কর্তৃক সংরক্ষিত কোন বীমা স্কীমকে প্রদানের জন্য কর্তন;

(ট) শ্রমিকগণের অথবা তাহাদের পরিবারের সদস্যগণের কল্যাণের জন্য সরকারের অনুমোদনক্রমে মালিক কর্তৃক গঠিত কোন তহবিল অথবা তৎকর্তৃক প্রণীত কোন স্কীমের জন্য শ্রমিকগণের লিখিত সম্মতিতে, চাঁদা কর্তন; এবং

(ঠ) চেক-অফ পদ্ধতিতে সিবিএ ইউনিয়নের জন্য চাঁদা কর্তন।

মজুরী হইতে অন্যান্য কর্তন

১৩০। ধারা-১২৫ (২) (ঞ), (ট) এবং (ঠ) এর অধীন মজুরী হইতে সকল কর্তন সরকার কর্তৃক আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে হইবে। 

মজুরী হইতে কর্তন বা মজুরী বিলম্বে পরিশোধের কারণে উত্থিত দাবী

১৩২। (১) যে ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানের খেলাপ 1[ করিয়া] কোন শ্রমিকের মজুরী হইতে কোন কর্তন করা হয় অথবা কোন শ্রমিকের মজুরী পরিশোধ করা না হয় অথবা তাহার মজুরী কিংবা কোন বিধির আওতায় প্রদেয় গ্রাচুইটি বা ভবিষ্য তহবিলের প্রাপ্য পরিশোধে বিলম্বে ঘটে সে ক্ষেত্রে তিনি, অথবা তাহার মৃতু্য হইলে তাহার কোন উত্তরাধিকারী অথবা কোন আইনসঙ্গত প্রতিনিধি কর্তৃক মজুরী ফেরত পাওয়ার জন্য অথবা বকেয়া বা বিলম্বিত মজুরী ও অন্যান্য পাওনা আদায়ের জন্য শ্রম আদালতে দরখাসত্দ করিতে পারিবেন।

(২) উক্তরূপ দরখাসত্দ, সংশিস্নষ্ট শ্রমিক যে স্থানে কাজ করিতেন অথবা যে স্থানে তাহাকে মজুরী পরিশোধ করা হইত সে স্থান যে শ্রম আদালতের এখতিয়ারাধীন, সে শ্রম আদালতে মজুরী কর্তনের তারিখ হইতে অথবা, ক্ষেত্রমত, মজুরী প্রদেয় হওয়ার তারিখ হইতে বারো মাসের মধ্যে পেশ করিতে হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ কোন দরখাস্ত উক্ত সময়ের পরেও পেশ করা যাইবে যদি দরখাস্তকারী শ্রম আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, উক্ত সময়ের মধ্যে দরখাসত্দ দাখিল না করার পিছনে তাহার যথেষ্ট কারণ ছিল।

(৩) শ্রম আদালত উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দরখাসত্দ প্রাপ্তির পর উহার উপর দরখাসত্দকারী এবং মালিক অথবা মজুরী পরিশোধের জন্য এই অধ্যায়ের বিধান অনুযায়ী দায়ী অন্য কোন ব্যক্তিকে শুনানীর জন্য যুক্তসংগত সুযোগ দান করিবে এবং প্রয়োজনীয় সাৰ্য প্রমাণ গ্রহণ করিবে, এবং যে মজুরী কর্তন করা হইয়াছে বা যে মজুরী পরিশোধ করা হয় নাই বা পরিশোধে বিলম্ব করা হইতেছে উহা দরখাসত্দকারীকে পরিশোধ করিবার জন্য মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী উক্ত ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোন আদেশ এই আইনের অধীন উক্ত মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরম্নদ্ধে গ্রহণীয় কোন শাসত্দিমূলক ব্যবস্থার হানি করিবে না।

(৫) শ্রম আদালত উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত নির্দেশের সময় মজুরীর শতকরা পঁচিশ ভাগ ৰতিপূরণ হিসাবে দরখাসত্দকারীকে প্রদানের জন্যও মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে পারিবে।

(৬) মজুরী পরিশোধে বিলম্বের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (৫) এর অধীন ৰতিপূরণ প্রদানের জন্য কোন নির্দেশ দেওয়া যাইবে না, যদি শ্রম আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উক্ত বিলম্বের কারণ ছিল-

(ক) শ্রমিককে প্রদেয় মজুরীর পরিমাণ সম্পর্কে প্রকৃত ভুল বা প্রকৃত বিরোধ;

(খ) কোন জরম্নরী অবস্থা অথবা বিশেষ পরিস্থিতির কারণে মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তি কর্তৃক তাহার যুক্তিসংগত চেষ্টা সত্ত্বেও যথাসময়ে উহা প্রদান করিতে অৰমতা; অথবা

(গ) মজুরী গ্রহণে অথবা উহার জন্য দরখাসত্দ করিতে শ্রমিকের ব্যর্থতা।

(৭) এই ধারার অধীন কোন দরখাসত্দ শুনানীকালে যদি শ্রম আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উক্ত দরখাসত্দ বিদ্বেষ প্রসূত অথবা বিরক্তিকর তাহা হইলে আদালত দরখাসত্দকারীকে অনধিক দুইশত টাকা পর্যনত্দ জরিমানা করিতে পারিবে এবং উহা মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে প্রদান করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

 আপীল

১৩৫। (১) ধারা ১৩২ এর অধীন প্রদত্ত শ্রম আদালতের কোন আদেশের বিরম্নদ্ধে উহা প্রদানের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে ট্রাইবু্যনালে আপীল করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহাই থাকুক না কেন, শ্রম আদালতের উক্ত আদেশে প্রদেয় মজুরী বা ৰতিপূরণের পরিমাণ যদি এক হাজার টাকার অধিক না হয় তাহা হইলে মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী কোন ব্যক্তি উক্ত আদেশের বিরম্নদ্ধে কোন আপীল করিতে পারিবেন না এবং যদি মোট দাবীকৃত মজুরী পাঁচশত টাকার ঊধের্্ব না হয় তাহা হইলে কোন শ্রমিক, বা তাহার মৃতু্যর পর তাহার কোন উত্তরাধিকারী অথবা আইনসংগত প্রতিনিধি উক্ত আদেশের বিরম্নদ্ধে কোন আপীল করিতে পারিবেন না।

(৩) মালিক বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী কোন ব্যক্তি কতর্ৃক কোন আপীল করা যাইবে না, যদি না আপীলের স্মারকের সঙ্গে শ্রম আদালত কতর্ৃক প্রদত্ত এই মর্মে একটি প্রত্যয়ন পত্র সংযুক্ত থাকে যে, আপীলকারী যে অর্থ প্রদানের আদেশের বিরম্নদ্ধে আপীল করিতেছে সেই অর্থ শ্রম আদালতে জমা দিয়াছেন।

(৪) এই ধারার অধীন আপীলের ৰেত্র ব্যতীত অন্য সকল ৰেত্রে ধারা ১৩২ এর অধীন শ্রম আদালত কতর্ৃক প্রদত্ত সকল আদেশ চূড়ানত্দ হইবে।

(৫) তামাদী আইন, ১৯০৮ (১৯০৮ সনের ৯নং আইন) এর ধারা ৫ এর বিধান এই ধারার অধীন আপীলের ৰেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।

শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তি

২১০৷ (১) যদি কোন সময়ে কোন মালিক বা যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি দেখিতে পায় যে, মালিক এবং শ্রমিকগণের মধ্যে কোন বিরোধ উত্থিত হইবার সম্ভাবনা আছে, তাহা হইলে উক্ত মালিক অথবা যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি তাহার বা উহার অভিমত ব্যক্ত করিয়া অন্য পক্ষকে লিখিতভাবে জানাইবেন৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পত্র প্রাপ্তির পনের দিনের মধ্যে পত্র প্রাপক, অন্যপক্ষের সহিত আলোচনাক্রমে, পত্রে উত্থাপিত বিষয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার লক্ষ্যে যৌথ দরকষাকষি শুরু করিবার জন্য তাহার সহিত একটি সভার ব্যবস্থা করিবেন, এবং এইরূপ সভা এতদউদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত উভয় পক্ষের প্রতিনিধির মধ্যেও অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে৷

(৩) যদি পক্ষগণ উক্তরূপ আলোচনার পর আলোচিত বিষয়ের উপর কোন নিষ্পত্তিতে উপনীত হন, তাহা হইলে একটি নিষ্পত্তিনামা লিখিত হইবে এবং উহাতে পক্ষদ্বয় দস্তখত করিবেন, এবং উহার একটি কপি মালিক কর্তৃক সরকার, শ্রম পরিচালক এবং সালিসের নিকট প্রেরিত হইবে৷

(৪) যদি-

(ক) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রেরিত কোন পত্রের প্রাপক অন্য পক্ষের সহিত উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে সভার ব্যবস্থা করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে উক্ত অন্য পক্ষ, অথবা

(খ) উভয় পক্ষের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অনুষ্ঠিত প্রথম সভার তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে অথবা উভয় পক্ষের লিখিত সম্মতি অনুযায়ী বর্ধিত সময়ের মধ্যে কোন নিষ্পত্তিতে উপনীত হওয়া না যায়, তাহা হইলে যে কোন পক্ষ, উপ-ধারা (২) অথবা, ক্ষেত্রমত, এই উপ-ধারার দফা (খ) এ উল্লিখিত সময়সীমা শেষ হইবার পর পনর দিনের মধ্যে তত্সম্পর্কে উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত উপযুক্ত সালিসকে (Conciliator) অবহিত করিতে পারিবেন এবং বিরোধটি সালিসীর (Conciliation) মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার জন্য তাহাকে লিখিতভাবে অনুরোধ করিতে পারিবেন৷

(৫) এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপণ দ্বারা, উহাতে উল্লিখিত কোন নির্দিষ্ট এলাকা অথবা কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সালিস (Conciliator) নিযুক্ত করিবে, এবং উপ-ধারা (৪) এর অধীন সালিসীর (Conciliation) জন্য কোন অনুরোধ এই উপ-ধারার অধীন সংশ্লিষ্ট এলাকা বা প্রতিষ্ঠান বা শিল্পের জন্য নিযুক্ত সালিস (Conciliator) গ্রহণ করিবেন৷

(৬) উক্তরূপ অনুরোধ প্রাপ্ত হইবার দশ দিনের মধ্যে সালিস (Conciliator) তাহার সালিসী কার্যক্রম (Conciliation) শুরু করিবেন, এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য উভয় পক্ষের সভা আহ্বান করিবেন৷

(৭) বিরোধের পক্ষগণ স্বয়ং অথবা তাহাদের মনোনীত এবং উভয় পক্ষের মধ্যে অবশ্য পালনীয় চুক্তি সম্পাদন করিতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে সালিস (Conciliator) এর নিকট তত্কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে ও সময়ে হাজির হইবেন৷

(৮) যদি সালিসীর (Conciliation) ফলে বিরোধ নিষ্পত্তি হয় তাহা হইলে, সালিস (Conciliator) তত্সম্পর্কে সরকারের নিকট একটি রিপোর্ট পেশ করিবেন, এবং ইহার সহিত উভয়পক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত নিষ্পত্তিনামার একটি কপিও প্রেরিত হইবে৷

(৯) যদি সালিস (Conciliator) কর্তৃক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অনুরোধ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে বিরোধটি নিষ্পত্তি না হয়, তাহা হইলে সালিসী কার্যক্রম (Conciliation) ব্যর্থ হইবে, অথবা উভয় পক্ষের লিখিত সম্মতিক্রমে আরো অধিক সময় চালানো যাইবে৷

(১০) যদি সালিসী কার্যক্রম (Conciliation) ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে সালিস (Conciliator) উভয় পক্ষকে বিরোধটি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উহা কোন মধ্যস্থতাকারী (Arbitrator) এর নিকট প্রেরণ করিবার জন্য রাজী করাইতে চেষ্টা করিবেন৷

(১১) যদি পক্ষগণ বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য কোন মধ্যস্থতাকারীর (Arbitrator) নিকট প্রেরণে রাজী না হন, তাহা হইলে সালিস (Conciliator), সালিসী কার্যক্রম (Conciliation) ব্যর্থ হওয়ার তিন দিনের মধ্যে, উহা ব্যর্থ হইয়াছে এই মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র পক্ষগণকে প্রদান করিবেন৷

(১২) যদি পক্ষগণ বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য কোন মধ্যস্থতাকারীর (Arbitrator) নিকট প্রেরণ করিতে রাজী হন, তাহা হইলে তাহাদের সকলের স্বীকৃত কোন মধ্যস্থতাকারীর (Arbitrator) নিকট বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য যৌথ অনুরোধপত্র প্রেরণ করিবেন৷

(১৩) উপ-ধারা (১২) তে উল্লিখিত মধ্যস্থতাকারী (Arbitrator) সরকার কর্তৃক এতদ্‌উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত মধ্যস্থতাকারীর তালিকা হইতে কোন ব্যক্তি হইতে পারিবেন, অথবা পক্ষগণ কর্তৃক স্বীকৃত অন্য যে কোন ব্যক্তি হইতে পারিবেন৷

(১৪) মধ্যস্থতাকারী (Arbitrator) মধ্যস্থতার অনুরোধ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে, অথবা পক্ষগণ কর্তৃক লিখিতভাবে স্বীকৃত কোন বর্ধিত সময়ের মধ্যে তাহার রোয়েদাদ প্রদান করিবেন৷

(১৫) মধ্যস্থতাকারী (Arbitrator) তাহার রোয়েদাদ প্রদানের পর উহার একটি কপি পক্ষগণকে এবং আরেকটি কপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন৷

(১৬) মধ্যস্থতাকারী (Arbitrator) কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদ চূড়ান্ত হইবে এবং ইহার বিরুদ্ধে কোন আপীল চলিবে না৷

(১৭) মধ্যস্থতাকারী (Arbitrator) কর্তৃক নির্ধারিত অনধিক দুই বত্সর পর্যন্ত কোন রোয়েদাদ বৈধ থাকিবে৷

(১৮) শ্রম পরিচালক, কোন বিরোধ নিষ্পত্তির স্বার্থে উপযুক্ত মনে করিলে যে কোন সময় কোন সালিস (Conciliator) এর নিকট হইতে কোন সালিসী কার্যক্রম (Conciliation) উঠাইয়া আনিয়া নিজেই উহা চালাইয়া যাইতে পারিবেন, অথবা অন্য কোন সালিস (Conciliator) এর নিকট উহা হস্তান্তর করিতে পারিবেন, এবং এক্ষেত্রে এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে৷

(১৯) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন প্রতিষ্ঠানপুঞ্জ সম্পর্কে কোন মালিকগণের ট্রেড ইউনিয়ন অথবা ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন রেজিস্ট্রি করা হইয়াছে, সে প্রতিষ্ঠানপুঞ্জের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি শিল্প বিরোধ সম্পর্কে উক্ত মালিকগণের ট্রেড ইউনিয়ন অথবা ফেডারেশনের সহিত যোগাযোগ করিবে, এবং উক্তরূপ মালিকগণের ট্রেড ইউনিয়ন অথবা ফেডারেশনের সংগে সম্পাদিত শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কোন চুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপুঞ্জের সকল মালিক ও শ্রমিকগণের উপর অবশ্য পালনীয় হইবে৷

শ্রম আদালতে দরখাস্ত

২১৩৷ কোন যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি অথবা কোন মালিক অথবা কোন শ্রমিক এই আইন বা কোন রোয়েদাদ বা কোন নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন বা দ্বারা নিশ্চিত বা প্রদত্ত 1[বা কোন প্রচলিত প্রথা বা কোন বিজ্ঞপ্তি বা কোন আদেশ বা কোন নোটিফিকেশন বা অন্য কোন ভাবে স্বীকৃত] কোন অধিকার প্রয়োগের জন্য শ্রম আদালতে দরখাস্ত করিতে পারিবেন৷

শ্রম আদালত

২১৪৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্যে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রম আদালত স্থাপন করিতে পারিবে৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন একাধিক শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠিত হইলে, সরকার উক্ত প্রজ্ঞাপনে উহাদের প্রত্যেককে যে এলাকায় এই আইনের অধীন এখতিয়ার প্রয়োগ করিবে উহা নির্ধারণ করিয়া দিবে৷

(৩) শ্রম আদালতের একজন চেয়ারম্যান এবং তাহাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য, দুইজন সদস্যসমন্বয়ে গঠিত হইবে, তবে কোন অপরাধের বিচার অথবা দশম এবং দ্বাদশ অধ্যায়ের অধীন কোন বিষয় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে উহা কেবল মাত্র চেয়ারম্যান সমন্বয়ে গঠিত হইবে৷

1[(৩ক) শ্রম আদালতের সদস্যগণ তাহাদের মতামত লিখিতভাবে শ্রম আদালতের চেয়ারম্যানকে জানাইতে পারিবেন এবং সদস্যগণ কোন মতামত জানাইলে উহা মামলার রায়ে অবশ্যই উলেস্নখ করিতে হইবে।]

(৪) শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান সরকার কর্তৃক কর্মরত জেলাজজ অথবা অতিরিক্ত জেলা জজগণের মধ্য হইতে নিযুক্ত হইবেন৷

(৫) শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণের নিযুক্তির শর্তাবলী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে৷

(৬) শ্রম আদালতের দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন মালিকগণের প্রতিনিধিত্বকারী এবং অপরজন শ্রমিকগণের প্রতিনিধিত্বকারী হইবেন, এবং তাহারা উপ-ধারা (৯) এ বর্ণিত পন্থায় নিযুক্ত হইবেন৷

(৭) সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায়, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, দুইটি সদস্য তালিকা প্রস্তুত করিবে, যাহার একটিতে ছয়জন মালিক প্রতিনিধির নাম এবং অপরটিতে ছয়জন শ্রমিক প্রতিনিধির নাম থাকিবে৷

(৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রস্তুতকৃত সদস্য তালিকা প্রতি দুই বত্সর অন্তর পুনর্গঠিত হইবে, তবে উক্ত দুই বত্সর শেষ হওয়া সত্ত্বেও পূর্ববর্তী তালিকার অন্তর্ভুক্ত সদস্যগণ নূতন তালিকা সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপিত না হওয়া পর্যন্ত তালিকাভুক্ত থাকিবেন৷

(৯) শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান কোন নির্দিষ্ট শিল্প বিরোধের শুনানী বা নিষ্পত্তির জন্য উপ-ধারা (৭) এ উল্লিখিত উভয় তালিকা হইতে একজন করিয়া প্রতিনিধকে নির্বাচন করিবেন এবং উক্তরূপ নির্বাচিত প্রতিনিধিদ্বয় এবং চেয়ারম্যান সহকারে উক্ত শিল্প বিরোধ সম্পর্কে শ্রম আদালত গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানীর জন্য চেয়ারম্যান উক্ত যে কোন তালিকা হইতে যে কোন একজন প্রতিনিধকে আদালতের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করিতে পারিবেন৷

(১০) কোন শ্রম আদালত নিম্নলিখিত বিষয়ে অনন্য এখতিয়ারের অধিকারী হইবে, যথাঃ-

(ক) এই আইনের অধীন আনীত, পেশকৃত অথবা দায়েরকৃত কোন শিল্প বিরোধ অথবা অন্য কোন বিরোধ অথবা কোন প্রশ্নের বিচারও নিষ্পত্তি;

(খ) সরকার কর্তৃক পেশকৃত কোন নিষ্পত্তি ভংগ অথবা বাস্তবায়ন সম্পর্কিত কোন বিষয়ের অনুসন্ধান, মিমাংসা ও নিষ্পত্তি;

(গ) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহের বিচার; এবং

(ঘ) এই আইন অথবা অন্য কোন আইনের অধীন বা দ্বারা প্রদত্ত বা প্রদেয় অন্য কোন ক্ষমতা প্রয়োগ অথবা কার্য সম্পাদন৷

(১১) যদি শ্রম আদালতের কোন সদস্য আদালতের কোন শুনানীর তারিখে অনুপস্থিত থাকেন, অথবা কোন কারণে হাজির হইতে অপারগ হন, উক্তরূপ অনুপস্থিতি বা অপারগতা কোন মামলার শুনানীর শুরুতেই হউক অথবা উহা চলাকালেই হউক, তাহা হইলে, আদালতের কার্যধারা তাহার অনুপস্থিতিতেই শুরু করা যাইবে অথবা, ক্ষেত্রমত, চালাইয়া যাওয়া যাইবে, এবং তাহার অনুপস্থিতিতে আদালতের সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ প্রদান করা যাইবে; এবং শ্রম আদালতের কোন কাজ, কার্যধারা সিদ্ধান্ত অথবা রোয়েদাদ কেবলমাত্র উক্তরূপ অনুপস্থিতির কারণে অথবা শ্রম আদালতের কোন শূন্যতার কারণে অথবা শ্রম আদালত গঠনে কোন ত্রুটির কারণে অবৈধ হইবে না বা উহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, যদি আদালতের কোন সদস্য কোন নির্দিষ্ট মামলায় অনুপস্থিতির কথা চেয়ারম্যানকে পূর্বেই অবহিত করেন সেই ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষের তালিকা হইতে অন্য একজন সদস্যকে মনোনীত করিবেনঃ

আরো শর্ত থাকে যে, কোন মামলার রায়ে উভয় পক্ষের সদস্যদের মতামত অবশ্যই উল্লেখ করিতে হইবে৷

(১২) ফৌজদারী কার্যবিধি এর পঁয়ত্রিশতম অধ্যায়ের বিধানাবলী শ্রম আদালতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, এবং উক্ত অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে শ্রম আদালত একটি দেওয়ানী আদালত বলিয়া গণ্য হইবে৷

(১৩) সকল শ্রম আদালত ট্রাইব্যুনালের অধঃস্তন আদালত হইবে৷

অপরাধ বিচার ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে শ্রম আদালতের ক্ষমতা ওকার্যক্রম

২১৬৷ (১) অপরাধ ব্যতীত এই আইনের অধীন অন্য কোন বিষয়, প্রশ্ন বা বিরোধের বিচার ও নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে, শ্রম আদালত একটি দেওয়ানী আদালত বলিয়া গণ্য হইবে এবং দেওয়ানী কার্যবিধির অধীন দেওয়ানী আদালতের উপর ন্যস্ত সকল ক্ষমতা নিম্নবর্ণিত ক্ষমতাসহ, শ্রম আদালতেরও থাকিবে, যথাঃ-

(ক) কোন ব্যক্তির উপস্থিতি এবং তাহাকে শপথাধীন জবানবন্দী এবং সাক্ষ্য প্রদানে বাধ্য করা;

(খ) কোন দলিল বা বস্তু হাজির করিতে বাধ্য করা;

(গ) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য অথবা দলিল পরীক্ষার জন্য কমিশন প্রেরণ করা;

(ঘ) কোন পক্ষের আদালতে অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে মামলায় একতরফা সিদ্ধান্ত প্রদান করা;

(ঙ) একতরফা সিদ্ধান্ত বাতিল করা;

(চ) কোন পক্ষের অনুপস্থিতির কারণে প্রদত্ত মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করা; এবং

(ছ) মামলার উদ্দেশ্য ব্যাহত রোধ করার লক্ষ্যে শ্রম আদালত যে কোন পক্ষের উপর অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারী করিতে পারিবে৷

(২) এই আইন সাপেক্ষে, কোন শ্রম আদালতে কোন দরখাস্ত বা দলিল পেশ করা, প্রদর্শন করা অথবা লিপিবদ্ধ করার জন্য অথবা উহা হইতে কোন দলিল নেওয়ার জন্য কোন কোর্ট-ফিস প্রদান করিতে হইবে না৷

(৩) শ্রম আদালত জারীকারক অথবা বিশেষ বাহক মারফত অথবা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অথবা উভয়বিধভাবে কোন মামলার প্রতিপক্ষকে মামলা দায়ের করার অনধিক দশ দিনের মধ্যে তাহার লিখিত জবাব বা আপত্তি পেশ করিবার জন্য নির্দেশ দিবে৷

(৪) শ্রম আদালত, যুক্তি লিপিবদ্ধ করিয়া, উক্ত সময় অনধিক সর্বমোট সাতদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করিতে পারিবে৷

(৫) যদি প্রতিপক্ষ নোটিশে উল্লিখিত অথবা বর্ধিত সময়ের মধ্যে কোন লিখিত জবাব বা আপত্তি পেশ করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে মামলাটি একতরফা শুনানীক্রমে নিষ্পত্তি করা হইবে৷

(৬) কোন পক্ষের আবেদনক্রমে শ্রম আদালত সর্বমোট সাত দিনের অধিক সময় মামলার শুনানী স্থগিত রাখিতে পারিবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, যদি মামলার উভয় পক্ষ স্থগিতাদেশ প্রার্থনা করে, তাহা হইলে সর্বমোট অনধিক দশ দিন পর্যন্ত মামলার শুনানী স্থগিত রাখা যাইবে৷

(৭) যদি মামলার দরখাস্তকারী মামলা শুনানীর তারিখে অনুপস্থিত থাকে, তাহা হইলে মামলা খারিজ হইয়া যাইেবঃ

তবে শর্ত থাকে যে, খারিজ আদেশ প্রদানের তিন মাসের মধ্যে মামলার দরখাস্তকারীর আবেদনক্রমে খারিজ আদেশ বাতিল করার এখতিয়ার আদালতের থাকিবে৷

(৮) যদি মামলার প্রতিপক্ষ শুনানীর তারিখে অনুপস্থিত থাকে, তাহা হইলে মামলাটি একতরফা শুনানীক্রমে নিষ্পত্তি করা হইবে৷

(৯) কোন মামলা খারিজ হওয়ার কারণে, যে কারণে মামলাটি দায়ের করা হইয়াছিল উক্ত একই কারণে, নূতন মামলা দায়ের করা বারিত হইবে না যদি না ইহা অন্য কোন কারণে বারিত হয়, এবং খারিজ হওয়ার তিন মাস পর দায়ের করা হয়৷

(১০) যদি কোন মামলার সকল পক্ষ মামলাটি প্রত্যাহার করিবার জন্য শ্রম আদালতে দরখাস্ত করে, তাহা হইলে আদালত উভয় পক্ষকে শুনানী প্রদান করিয়া, মামলার যে কোন পর্যায়ে উহা প্রত্যাহার করার অনুমতি দিতে পারিবে যদি, আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, সংশ্লিষ্ট বিরোধটি আপোষে নিষ্পত্তি হইয়াছে৷

(১১) শ্রম আদালতের কোন রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ, লিখিতভাবে প্রকাশ্য আদালতে প্রদান করিতে হইবে, এবং উহার একটি কপি সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক পক্ষকে দেওয়া হইবে৷

1(১২) শ্রম আদালতের রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ, প্রত্যেক ক্ষেত্রে মামলা দায়ের করিবার তারিখ হইতে ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে।

(১৩) উপ-ধারা (১২) এর বিধান সত্ত্বেও, ৬০ (ষাট) দিনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ প্রদান করা সম্ভব না হইলে, উপযুক্ত কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া আদালত উক্ত সময়সীমা আরো ৯০ (নব্বই) দিন বর্ধিত করিতে পারিবে।]

কার্যধারা অনিষ্পন্ন থাকা কালে চাকুরীর শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকিবে

২২৮৷ (১) শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত কোন বিষয়ে কোন সালিসী কার্যধারা চলাকালে, অথবা মধ্যস্থতাকারী, শ্রম আদালত অথবা ট্রাইব্যুনালের নিকট কোন কার্যধারা চলাকালে কোন মালিক বিরোধে জড়িত কোন শ্রমিকের, উক্ত কার্যধারা শুরু হইবার পূর্বে প্রযোজ্য চাকুরীর শর্তাবলী তাহার অসুবিধা হয় এমনভাবে পরিবর্তন করিতে পারিবেন না, অথবা সালিস, মধ্যস্থতাকারী, শ্রম আদালত অথবা ট্রাইব্যুনাল, যখন যেখানে বা যাহার নিকটে উক্তরূপ কার্যধারা চলিতে থাকে, এর বিনা অনুমতিতে, উক্ত বিরোধ সম্পর্কিত নহে এমন অসদাচরণের জন্য ব্যতীত, উক্তরূপে শ্রমিককে চাকুরী হইতে ডিসচার্জ, বরখাস্ত বা অন্যকোন ভাবে শাস্তি দিতে পারিবেন না অথবা তাহার চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন না৷

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, শ্রম আদালতের পূর্ব অনুমোদন ব্যতিরেকে উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত কোন কার্যক্রম চলাকালে ট্রেড ইউনিয়নের কোন কর্মকর্তাকে ডিসচার্জ, বরখাস্ত অথবা অন্য কোন ভাবে অসদাচরণের জন্য শাস্তি দেওয়া যাইবে না৷

অব্যাহতির ক্ষমতা

৩২৪৷ (১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহাতে উল্লিখিত শর্ত বা বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে, কোন মালিক বা মালিক শ্রেণীকে অথবা কোন প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠান শ্রেণীকে বা ইহার কোন অংশ বিশেষকে অথবা কোন শ্রমিক বা শ্রমিক শ্রেণীকে এই আইনের দ্বিতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম অথবা অষ্টাদশ অধ্যায় অথবা উহার কোন ধারা অথবা একবিংশ অধ্যায়ের ধারা ৩২৫, ৩২৬, ৩৩৭ বা ৩৩৮ এর সকল বা যে কোন বিধানের প্রয়োগ বা মানিয়া চলা হইতে অব্যাহতি দিতে পারিবে৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অব্যাহতি আদেশ জন বা জাতীয় স্বার্থে করা হইবে এবং উক্ত আদেশ এক সংগে ছয় মাসের অধিক মেয়াদের জন্য বলবত্ থাকিবে না৷

(৩) প্রধান পরিদর্শক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠান শ্রেণী সম্পর্কে এই আইনের ধারা ১০০, ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৫ বা ১১৪ এর সকল বা যে কোন বিধানের প্রয়োগ কোন উত্সব, মেলা বা প্রদর্শনী উপলক্ষে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখিতে পারিবেন, এবং ইহা প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত মেয়াদের জন্য এবং শর্ত সাপেক্ষে বলবত্ থাকিবে৷

এই আইনের অধীন আদায়যোগ্য অর্থ আদায়

৩২৯৷ (১) এই আইন সাক্ষে, শ্রম আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক এই আইরে কোন ধারার অধীন প্রদারে জন্য নির্দেশিত কোন অর্থ অথবা এই আইরে কোন বিধানের অধীন কোন ব্যক্তি কর্তৃক প্রদেয় কোন অর্থ অথবা কোন নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন বা কোন মধ্যস্থতাকারী বা শ্রম আদালরে বা ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদ বা সিদ্ধাতের অধীন কোন ব্যক্তি বা মালিক কর্তৃক প্রদেয় কোন অর্থ উহা পাওয়ার অধিকারী কোন ব্যক্তির দরখাতের ভিত্তিতে এবং তাহার ইচ্ছানুযায়ী শ্রম আদালত কর্তৃক বা উহার নির্দেশে নিম্নরূপ যে কোন ভাবে আদায় করা যাইবে যথাঃ-

(ক) সরকারী দাবী হিসাবে;

(খ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায়, যে ব্যক্তি উক্ত অর্থ পরিশোধ করিতে বাধ্য তাহার অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয় করিয়া;

(গ) উক্ত প্রকারে সম্পূর্র্র্ণ অর্থ আদায় করা না গেলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায়, উক্ত ব্যক্তির স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করিয়া এবং বিক্রয় করিয়া; অথবা

(ঘ) কোন দেওয়ানী আদালরে অর্থ সংক্রান্ত ডিক্রী হিসাবে৷

(২) যে ক্ষেত্রে কোন নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন অথবা কোন মধ্যস্থতাকারী বা শ্রম আদালত বা ট্রাইব্যুনারে কোন সিদ্ধান্তবা রোয়েদারে অধীন কোন শ্রমিক কোন মালিকের নিকট হইতে এমন কোন সুবিধা পাইতে অধিকারী যাহা টাকায় হিসাব করা যায় সে ক্ষেত্রে, বিধি সাপেক্ষে, উক্ত সুবিধা টাকায় হিসাব করিয়া উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী আদায় করা যাইবে।

(৩) এই ধারার অধীন অর্থ আদারে জন্য কোন দরখাস্ত গ্রহণ করা হইবে না যদি না উহা অর্থ প্রয়ে হইবার তারিখ হইতে এক বত্সরের মধ্যে পেশ করা হয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত সময়ের পরেও কোন দরখাস্ত গ্রহণ করা যাইবে যদি শ্রম আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, দরখাস্তকারীর উক্ত সময়ের মধ্যে দরখাস্ত পেশ করিতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিলঃ

আরোও শর্ত থাকে যে, শ্রমিকের পাওনা উসুলের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাইবে৷

শেষ করছি আমার গত ২৯শে মে ২০২০ তারিখের লেখার উপসংহার কে পুনব্যক্ত করে-চাকরি হারালে বিচলিত হবেন না। উদ্যোক্তা হয়ে উঠোন।  নিজেকে প্রতিদিন একটু একটু করে বিক্রি করার চুক্তি থেকে মুক্ত হন।

ব্যারিস্টার খন্দকার এম এস কাউসার : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবী

kawsarbar@gmail.com, kawsar215@yahoo.co.uk