সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন

‘সপ্তাহে অন্তত ৩ দিনের জন্য হলেও সুপ্রিম কোর্ট খুলে দেয়া যায়’

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিচারপতিদের মোশন ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুপ্রিম কোর্টে নিয়মিত আদালত চালু করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদিন।

আজ বুধবার (৮ জুলাই) সর্বোচ্চ আদালত চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ মত প্রকাশ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সীমিত আকারে সাময়িক সময়ের জন্য ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে পরিচালিত আদালত ব্যবস্থা বাদ দিয়ে অবিলম্বে স্বাভাবিক আদালত চালুর তাগিদ দেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন।

এজন্য প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে, শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কীভাবে নিয়মিত আদালতের কার্যক্রম শুরু করা যায় সে বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ বিষয়ে বেশকিছু মতামত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতি। মতামতগুলো হল-

  • ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালত পরিচালনা স্থায়ী হতে পারে না। তবে সীমিত আকারে সাময়িক সময়ের জন্য এ ব্যবস্থা রাখা যায়।
  • বিচারপ্রার্থী সাধারণ জনগণ ও আইনজীবীদের স্বার্থে যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজা রেখে দেশের সব আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে।
  • বিচারপতিদের মোশন ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুপ্রিম কোর্টে নিয়মিত আদালত চালু করা যায়।
  • জীবন ও জীবিকার কথা চিন্তা করে বিচারক এবং আইনজীবীরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে আদালতে উপস্থিত হবেন এবং নির্দেশিত শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
  • আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বিচারক ও আইনজীবীরা কি ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, কোর্টে কোথায় বসবেন, কতোটা দূরত্বে বসবেন, কিভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবেন তা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ ও কোর্ট প্রশাসন মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন।
  • করোনাকালে স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘন করে কোন আইনজীবী যেন আদালতে উপস্থিত হতে না পারে সে বিষয়টি আইনজীবী সমিতির কার্যকরি কমিটি নিশ্চিত করবেন।
  • আইনজীবীরা তাদের মক্কেলদের সঙ্গে আদালতের বাহিরে সাক্ষাৎ করবেন, আদালত প্রাঙ্গণে নয়।
  • প্রধান বিচারপতি চাইলে নিম্ন আদালতেও একই উপায়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে।
  • অনেক মেধাবী ও নবীন আইনজীবী এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হয়েছে। এসব মেধাবী ও নবীন আইনজীবীদের পেশায় টিকিয়ে রাখার জন্য আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের দায়দায়িত্ব রয়েছে। আইন পেশার স্বার্থে এ বিষয়ে বাস্তবিক পদক্ষেপ কাম্য।
  • নিয়মিত আদালত কিভাবে চালু করা যায় সে বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করতে পারেন।

সবশেষে তিনি নিয়মিত আদালত চালুর পক্ষে আন্দোলনরত সাধারণ আইনজীবী পরিষদকে সকল আইনজীবীর সাথে সমন্বিত হয়ে বিচার বিভাগের অবিভাবক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহার আহবান জানান।