আইন-আদালত

মিথ্যা মামলা করায় বাদীর ৩ মাসের কারাদণ্ড

পূর্ব বিরোধের জেরে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারামারি ও চুরির অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় বাদীকে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে বিবাদীকে ৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

কক্সবাজারের চকোরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজীব কুমার দেব বুধবার (২৮ অক্টোবর) এ আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মামলার বাদী মোহাম্মদ মোদাচ্ছের মুরাদ কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শেখের কিল্লা ঘোনার বাসিন্দা আহমেদ হোসেনের ছেলে।

আদালত আদেশে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৫০(২,২এ) ধারায় বাদীকে মামলার চার জন অভিযুক্তের প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসাথে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৫০(৫) ধারায় ক্ষতিপূরণ প্রদানের অতিরিক্ত হিসেবে বাদীকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মোহাম্মদ মোদাচ্ছের মুরাদ ২০১০ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় এজাহার দায়ের করলে মারামারি ও চুরির মামলায় ৩২৬ ধারা সহ অন্যান্য ধারায় এফআইআর রেকর্ড হয়। তৎপরবর্তীকালে তা জি আর ০৪/১০ হিসেবে এন্ট্রিভূক্ত হয়। এই মামলা বিচারাধীন থাকায় একই বছরের ১১ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, কক্সবাজার স্মারক নং জে প্রা শি অ/কক্স/২০১০/২৫৭৯(৭) মূলে অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিককে সরকারি চাকুরী হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং এখনো তা বহাল আছে।

পরবর্তীতে আবু বকর সিদ্দিক সহ চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩২৩, ৩২৪, ৪৪৭ ধারায় অভিযোগ গঠিত হয় এবং বাকি ৯ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১০ বছর বিচারকাজ চলার পর আদালতে প্রমাণিত হয় পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বাদী এ মামলা দায়ের করে। এছাড়া চিকিৎসক কর্তৃক ইস্যুকৃত ও সংবাদদাতা কর্তৃক দাখিলীয় চিকিৎসা সনদ (এমসি) মিথ্যা সাক্ষ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়। একইসঙ্গে তদন্ত পরিচালনায় তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতি ও অবহেলা প্রমাণিত হয়। বিবাদীকে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চাকুরী হতে সাময়িক বরখাস্তের কারণে তার আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির বিষয়টি প্রমাণিত হয় এবং তিনি মামলা চলাকালে আর্থিক অনটনে পড়ে রিক্সাও চালিয়েছিলেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায়ের মাধ্যমে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৫০(১) ধারায় কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তদ্মর্মে অনুপস্থিত বাদীর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো হয়। কিন্তু সমন জারী হওয়ার পরও পরপর দুইটি ধার্য তারিখে হাজীর হয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বাদীর বিরুদ্ধে এমন আদেশ হয়।

আরো উল্লেখ্য রায়ে (মামলা নম্বর- জি আর ৪/২০১০) সকল অভিযুক্তকে খালাস দিয়ে বাদীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৯৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের সহ ডাক্তার ও তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।