কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছটায় অপহরণের পর শিশু হৃদয় মনিকে হত্যার মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আসামিরা হলেন- বাহাদুর মিয়া, আব্দুল খালেক ও শুক্কুর মিয়া। আদালত আসামিদের জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল আবেদন মঞ্জুর করে ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে দিয়েছেন।
আজ সোমবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এবং বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামি বাহাদুর মিয়ার পক্ষে আইনজীবী আব্দুস সালাম মামুন, আসামি আব্দুল খালেকের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, আসাদ উদ্দিন ও মোহাম্মদ নোয়াব আলী শুনানি করেন। অপর আসামি শুক্কুর মিয়ার পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শাহনাজ হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
এর আগে ২০১৩ সালে ৪ জুলাই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছটার বাসিন্দা নুরুল আলমের ছেলে হাজী হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র হৃদয় মনিকে (৬) অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিন সকাল ৭টার সময় হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পেছনে সমুদ্র সৈকতে শিশু মনির লাশ পাওয়া যায়। এরপর একই বছরের ৬ জুলাই হৃদয়ের বাবা নুরুল আলম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
পরে ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল পুলিশ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল খালেক, বাহাদুর মিয়া, আবদুস শুক্কুর ও জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
পরে আইনজীবী শিশির মনির জানান, আব্দুল খালেক ও শুকুর মিয়া মিয়ানমারের নাগরিক। আসাসি আব্দুল খালেক ও বাহাদুর মিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০১৫ সালের ৭ জুন কক্সবাজারের দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার জসিমকে খালাস দিয়ে বাকি তিনজন আসাসিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে নিয়ম অনুসারে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অপরদিকে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টে শুনানিতে আমরা প্রসিকিউশনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রমাণাদির বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার সময় ম্যাজিস্ট্রেট কক্ষে আসামি আব্দুল খালেক ও বাহাদুর উভয়ই একই সময়ে উপস্থিত ছিলেন। তাই এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আইনের চোখে কোনও জবানবন্দিই নয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ মামলার রায় ঘোষণা করলেন।