দীর্ঘ একুশ বছর পর সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মামলার ২০ আসামীর মধ্যে ১০ জনকে ফাঁসি, পাঁচজনের যাবজ্জীবন এবং বাকিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এস ইউ এম নুরুল ইসলাম। আর আদেশের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট রায়হান ওয়াজেদ চৌধুরী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামি হলেন- সাতকানিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন, ঠোঁট কাটা মানিক, জাহেদ, আবু মো. রাশেদ, বশির আহমদ, ফোরক আহমদ, জিল্লুর রহমান, তারেক, জসিম উদ্দিন এবং নাছির উদ্দিন রফিক।
যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামিরা হলেন- সাহেব মিয়ার ছেলে মো. ইদ্রিস, মোর্শেদুল আলম, ইব্রাহীম মিস্ত্রীর ছেলে ইদ্রিস এবং হারুনুর রশিদ।
এছাড়া মামলায় দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন- আবু তাহের, আবদুল মালেক, খায়ের আহমদ ও মো. মোস্তাক।
আসামিদের মধ্যে ১০ জন বর্তমানে কারাগরে রয়েছেন। মামলার ১নং আসামী লুৎফর রহমান চৌধুরী মারা গেছেন। আর পলাতক রয়েছেন বাকী ৯ আসামী।
কারাগারে থাকা আসামীরা হলেন- সাতকানিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন, নাছির উদ্দিন রফিক, ইব্রাহীমের ছেলে ইদ্রিস, জাহেদ, ঠোঁট কাটা মানিক, আবু মো. রাশেদ, ফোরক আহমদ, হারুনুর রশিদ, জিল্লুর রহমান ও আবু তাহের।
পলাতক আসামীরা হলেন- বশির আহমদ, সাহেব মিয়ার ছেলে মো. ইদ্রিস, তারেক, আইয়ুব, মোর্শেদুল আলম, আবদুল মালেক, জসিম উদ্দিন, খায়ের আহমদ ও মো. মোস্তাক।
উল্লেখ্য, সাতকানিয়া উপজেলার ১৭ নং সোনাকানিয়া ইউনিয়নের দুইবার নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগ নেতা ছিলেন আমজাদ হোসেন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় অপরাধ নির্মূল ও সন্ত্রাস দমনে প্রতিবাদী ভূমিকা রাখেন।
যে কারণে সন্ত্রাসীদের চক্ষুশূলে পরিণত হন তিনি। তাদের লক্ষ্য পূরণে চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর রাত সোয়া ১২ টার দিকে মীর্জাখীল দরবার শরীফের ওরশ চলাকালীন সময়ে দরবার শরীফের উত্তর গেইট সংলগ্ন নাছিরের চায়ের দোকানের সামনে তাকে হত্যা করে দুবৃত্তরা।
ঘটনার পরদিন ৪ অক্টোবর নিহত চেয়ারম্যানের স্ত্রী সৈয়দা রোশনা আকতার বাদী হয়ে ২০ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে সাতকানিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ২১জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। দীর্ঘ একুশ বছর পর আজ চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন আলোচিত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।