দুর্নীতির অভিযোগ আসলে সরকারি কর্মকর্তাসহ যে কোনও ব্যক্তিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করতে পারবে উল্লেখ করে পর্যবেক্ষণসহ এ সংক্রান্ত মামলার রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের স্বাক্ষরের পর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
এর আগে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জিকে শামীমের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে জামিন করানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ কর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপার রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এর ফলে তাকে দুদকের তলবাদেশে হাজির হতেই হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। গত ৩ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে রুপার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, জেডআই খান পান্না ও অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন দোলন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির।
ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করে জিকে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সঙ্গে আঁতাত করে জামিন করিয়ে বিপুল অর্থ লোপাটসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। গত ২৯ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্বাক্ষরিত নোটিশে এ তলবাদেশ দেওয়া হয়।
তলবাদেশের চিঠিতে বলা হয়েছে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করে জিকে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সঙ্গে আঁতাত করে জামিন করিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
সে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের কপি ও চাহিদা দেওয়া নথি-পত্রসসহ তাকে হাজির হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। পরে ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১ নভেম্বর রিট দায়ের করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপা।
রুপার ওই আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। ওই মামলার রায়ে আদালত অভিযোগ এলে দুদক যেকোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করতে পারবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।