সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল তাঁকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের যে অভিযোগ করেছেন, সেটাকে মিথ্যা বলছে র্যাব। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব বলেছে, ইব্রাহিম খলিলকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ইব্রাহিম খলিল তাঁর ওপর অত্যাচারের যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা ‘কাল্পনিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলেও দাবি করা হয়েছে র্যাবের ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহর পক্ষে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান সহকারী পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খান।
১২ মার্চ ইব্রাহিম খলিলের একটি বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওই দিন চকবাজার থানা পুলিশ এই আইনজীবীকে নিম্ন আদালতে হাজির করে। সে সময় উপস্থিত লোকজনকে তিনি বলেন, তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে র্যাব সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার ও মারধর করেছেন।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও চিত্রে ইব্রাহিম খলিলকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাকে গত বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে র্যাব সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। এবং র্যাব সদস্যরা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞাত স্থানে রাখে ও শরীরে ইনজেকশন পুশ করে। পুশ করে আমাকে সেন্সলেস করে ফেলে। তাদের যে ক্যাম্প সদরঘাটে বুড়িগঙ্গার পাড়ে, সেখানে আমাকে রাখে। প্রথম বুড়িগঙ্গা যে সেতু সেটার ওপর উঠে আমার হাত–পা বাঁধে এবং ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আরেক সদস্য বলে তাকে ফেলে দেওয়ার দরকার নেই। থাক। এই বলে টর্চার করে। সারা শরীরে টর্চারের দাগ। পুরো শরীরে টর্চার।’
এ ঘটনায় গত রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন আইনজীবীরা। ওই সমাবেশে সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বাউন্ডারিতে এসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একজন আইনজীবীকে ধরে নিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন চালাবে, তা বরদাশত করা যায় না।’ এ ঘটনায় ফৌজদারি মামলা করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
র্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাঁকে ১১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য চকবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়টির পক্ষে র্যাবের কাছে উপযুক্ত সাক্ষী ও প্রযুক্তিগত তথ্য–প্রমাণ আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া ভিডিওতে তিনি তাঁর ওপর বিভিন্ন ‘মনগড়া’ ও ‘অবিশ্বাস্য’ অত্যাচারের বর্ণনা দিয়েছেন। এটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ, ইব্রাহীম খলিলকে বিকেলে গ্রেপ্তারের পরই রাত ১২টা ৪০ মিনিটে চকবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গত রোববার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ইব্রাহিম খলিল। র্যাব বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে ফোন করা হয়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি।