বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় একাধিকবার জুম মিটিং করেছেন আলোচিত ব্যবসায়ী ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন। এ কারণে ইন্টারনেট সংযোগসহ তাকে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে ১৭ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এরইমধ্যে ৪ জন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ শুক্রবার (২ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিএসএমএমইউ হাসপাতালে থাকা অবস্থায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন একাধিকবার জুম প্লাটফর্মে মিটিং করেন। কারাবন্দি হয়েও জুম মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে কারা কর্তৃপক্ষ।
কারা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, কারাবন্দিদের মাঝে মধ্যেই মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু হাসপাতালে বসে রীতিমতো ইন্টারনেট ব্যবহার করে জুম মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার বিষয়টিতে কারা কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মোমিন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় কারা অধিদফতর থেকে তিন সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলামকে। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে নারায়ণগঞ্জের জেলার শাহ রফিকুল ইসলাম ও সদস্য হিসেবে মুন্সীগঞ্জের জেল সুপার নুরনবী ভুঁইয়া রয়েছেন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে যেসব কারারক্ষী পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতেন, তাদের মধ্যে ১৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে চার জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কারা প্রশাসন। বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রাহকদের ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ডেসটিনির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর ২০১২ সালে গ্রেফতার হন এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রফিকুল আমীন। গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা দুটি মামলা এখনও বিচারাধীন। ২০১৩ সালে আদালতের এক নির্দেশে ডেসটিনির নামে থাকা বিপুল সম্পদ জব্দ করে পুলিশকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়।