সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের বক্তব্য তার দলীয় বক্তব্য, সমিতির নয়

একাত্তরের রণাঙ্গনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত নেতারা।

রোববার (২৯ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে পৃথক কর্মসূচিতে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিক উল্লাহর নেতৃত্বে দ্বিতীয় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সমিতির দক্ষিণ হলে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট শফিক উল্লাহ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাড ও স্বারক ব্যবহার করে জনসম্মুখে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের ব্যক্তিগত বক্তব্যকে প্রচার করে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা হয়েছে মাত্র। এই বিবৃতি একান্ত তার ব্যক্তিগত বক্তব্য, যা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নয়। কারণ এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি-সম্পাদক থেকে অনেকেই জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এবং আছেন। কিন্তু আইনজীবী নেতারা নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনকে কখনোই রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেননি। দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষতার প্রশ্নে সবসময় তারা বদ্ধপরিকর ও আপসহীন ছিলেন। অথচ আজ সুপ্রিম কোর্ট বারের প্যাড ব্যবহার করে নিজ রাজনৈতিক দলের মত প্রকাশ করার মতো সস্তা রাজনীতি করে সমিতির দীর্ঘদিনের ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার চক্রান্ত শুরু করা হলো।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও জিয়াউর রহমানসহ কিছু ব্যক্তি পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কনফেডারেশন করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিলেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গড়ার কাজে ব্যস্ত তখন জিয়াউর রহমান দেশে অরাজকতা সৃষ্টিকারী গণবাহিনী ও সর্বহারা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু দুষ্কৃতকারী সৈনিক জিয়া ও মোশতাকের ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। জিয়া সামরিক আইন জারি করে বন্দুকের নল দ্বারা ক্ষমতায় প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। পঁচাত্তর পরবর্তী খুনি জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীতে গুপ্ত হত্যা, রাজনীতিবিদ হত্যাসহ এহেন কর্মকাণ্ড নেই যা করেনি।

অ্যাডভোকেট শফিক উল্লাহ আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের বক্তব্য তার দলীয় বক্তব্য, যা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বক্তব্য নয় বরং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাড ও স্বারক তাদের হীন দলীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে বারের ঐতিহ্য ও রীতিনীতি লংঘনের মতো জঘন্য অপরাধ করেছেন। অনতিবিলম্বে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।