সোনার বাংলা বিনির্মাণে অহিংস নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন শেখ হাসিনা

স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বর্তমান সরকার অহিংস নীতি অনুযায়ী কাজ করছে উল্লেখ করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতা যে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে চেয়েছেন সেখানে অহিংস নীতি ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক ও অহিংস নীতির মানুষ।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই অহিংস নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।

মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির কারণে ইংরেজদের অসহ্য নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। আজ সেই অহিংস নীতি অনুযায়ী ইংরেজদের সংগ্রাম ও আন্দোলন সফল হচ্ছে। মহাত্মা গান্ধী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নোয়াখালী এসেছিলেন। তার আগমনের ফলে নোয়াখালীতে শান্তি ফিরে এসেছে।

শনিবার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর গান্ধী আশ্রমে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধনের পর এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সভাপতি বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সংসদ সদস্য মিজ অরোমা দত্ত, জাতিসংঘের অন্তবর্তীকালীন প্রতিনিধি তৌমু পউতি আইনেন।

এর আগে, বিকেলে মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মবার্ষিকী, আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস ও নবরুপায়িত গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের উদ্বোধন করা হয়। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে ফিতা কেটে মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। পরে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতিতে অতিথিরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শান্তি বইতে স্বাক্ষর করেন।

জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলের শেষের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো নোয়াখালীতেও হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দুঃসময়ে শান্তি মিশন নিয়ে নোয়াখালী ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী। ১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী অবস্থানকালে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব স্থাপনসহ সেবামূলক বিভিন্ন কাজে হাত দেন। এভাবে ১৯৪৭ সালের সালের ২৯ জানুয়ারি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ গ্রামে গান্ধীর আগমন ঘটে।

জয়াগের তৎকালীন জমিদার ব্যারিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষ নিজ জমিদারির সব সম্পত্তি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য গান্ধীকে দিয়ে দেন। এরপর জমিদার বাড়িতে গড়ে ওঠে গান্ধী শান্তি ক্যাম্প। বাড়ির পাশে একটি কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন গান্ধী। যা পরে গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে জাতীয়করণ করা হয়। যেখানে কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি গান্ধীর সাতটি অহিংস নীতি-নীতিহীন রাজনীতি, নৈতিকতাহীন বাণিজ্য,পরিশ্রমহীন সম্পদ, চরিত্রহীন শিক্ষা, মানবতাহীন বিজ্ঞান, বিবেকবর্জিত আনন্দ ও ত্যাগহীন অর্চনা জীবন দর্শন সম্পর্কে আগামী প্রজন্মদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তারাও জানতে পারছে মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে।

১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ‘গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট’ অর্ডিন্যান্স গঠনের মধ্যদিয়ে মানুষের মধ্যে গান্ধীর জীবন দর্শন ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ও বিভিন্ন সেবামূলক কাজ শুরু করা হয়।