সাইক্লিংয়ের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে আইন ও নীতিমালা সংশোধন প্রয়োজন

বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত বাহন দুই চাকার সাইকেল চলাচলের সঙ্গে সম্পর্কিত বহু নীতিমালা রয়েছে। সেসব আইন ও নীতিমালায় এমন কিছু উপাদান বিদ্যমান আছে যা সাইক্লিংয়ের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত কিংবা নিরুৎসাহিত করে।

সাইক্লিংয়ের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান ও গতিশীল করার জন্য সে ধরনের উপাদানগুলোকে চিহ্নিত করে আইন ও নীতিমালা সংশোধন করা প্রয়োজন।

শনিবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) উদ্যোগে ‘সাইক্লিং প্রসারে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার পর্যালোচনা ও আধুনিকায়ন’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক পাউস পিয়ারী বলেন, সাইকেল হলো পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী এবং অল্প জায়গায় রাখা যায় এমন একটি জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ বাহন। যদি সরকারের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সাইক্লিংয়ের উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়, তাহলে এর গুরুত্ব আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, সাইকেল রুট নিরাপদ ও নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সাইকেল চালানোয় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে সাইকেলের ক্ষেত্রে। সাইকেল চালানোর সুবিধার ব্যাপারে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ে বিবেচনায় আনা সম্ভব হলে স্বাস্থ্যখাতে ভর্তুকির পরিমাণ কমে আসবে।

গবেষক ও স্থপতি জাকারিয়া ইবনে রাজ্জাক রাসেল বলেন, সাইকেল চলাচলে নীতিমালা ও আইন আছে। কিন্তু সেটা যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে সেই আইন ও নীতিমালা বাস্তবে কোনো কাজে আসে না। এজন্য প্রয়োজনে আইন ও নীতিমালা সংশোধন করতে হবে এবং যথাযথভাবে করতে হবে।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজিব বলেন, সঠিক জায়গায় রুট নির্ধারণ করতে না পারায় সাইকেল লেনগুলো দখল হয়ে আছে। তাই সাইকেল লেনগুলোকে কোনো বাস্তবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এই সব ত্রুটির সংশোধন করা দরকার।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, আমাদের সামগ্রিক ইকো সিস্টেম বজায় রাখতে আইন ও নীতিমালা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র ব্যায়াম বা ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, প্রাত্যহিক কাজ-কর্ম করার জন্য সাইকেলের ব্যবহারকে জনপ্রিয় ও সহজ করতে হবে। অফিস, আদালত, মার্কেটে চলাচলে সাইকেলবান্ধব করতে সাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

এসময় বক্তারা সাইক্লিংয়ে মানুষকে আগ্রহী করার জন্য বিভিন্ন সুপারিশ দেন। সুপারিশগুলো হলো

১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত যাতায়াতের জন্য সাইকেল ব্যবহার করায় উৎসাহিত করতে হবে।

২. বাস্তবায়িত সাইকেল লেনগুলো দখলমুক্ত করে চলাচল উপযোগী করতে হবে।

৩. হাইওয়েতে প্রয়োজনীয় সব জায়গায় সাইকেল লেন বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. অফিস, আদালত, মার্কেট এবং বিভিন্ন ট্যুরিস্ট প্লেস সাইকেলবান্ধব করতে হবে।

৫. সাইকেল চলাচলে/প্রসারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নীতিমালা/আইন সংশোধন করতে হবে।

৬. সাইক্লিংয়ের সুবিধাসমূহ প্রচার করে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকতা সামিউল হাসান সজিব, গ্রিনফোর্সের সমন্বয়ক মেসবাহ সুমন, বিডি ট্যুরিস্ট সাইক্লিংয়ের সমন্বয়ক রোজিনা আক্তার প্রমুখ।