পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদ

নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীনদের জন্য কবরস্থান-মসজিদ করে দিলেন আইজিপি

লক্ষ্মীপুরে নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীনদের জন্য কবরস্থান নির্মাণ করে দিয়েছেন পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদ।

জেলার সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতার গোপ্টা এলাকায় সাড়ে ২৯ শতাংশ জমির ওপর নিজ অর্থায়নে কবরস্থানটি নির্মাণ করে দেন তিনি। সেখানে একটি মসজিদও নির্মাণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে অনানুষ্ঠানিকভাবে কবরস্থানের ফলক উন্মোচন করেন আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার মেঘনা নদী সংলগ্ন বাসিন্দারা দিন দিন ভাঙনের কবলে পড়ে উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যাদের জমি কেনার সামর্থ্য নেই তারা সরকারি বেড়িবাঁধ বা সড়কের পাশে বসবাস করছেন।

ভাঙনের শিকার এমন আড়াই হাজার পরিবারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের দুই পাশে বসতি স্থাপন করে আছেন। তবে এসব পরিবারের কেউ মারা গেলে তাদের কবর দেওয়ার মতো কোনো জায়গা ছিলো না। মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো তাদের পরিবারের সদস্যদের। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদের নজরে পড়ে। জেলা পুলিশের মাধ্যমে তিনি ভবানীগঞ্জের সুতার গোপ্টাতে জমি ক্রয় করে গণকবর এবং মসজিদ তৈরি করে দেন।

জেলা পুলিশ জানায়, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর আইজিপির উদ্যোগে পুলিশ সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের আবদুর কুদ্দুসের কাছ থেকে ভবানীগঞ্জ এলাকায় কবরের জন্য জমি কিনে নেন। গত বছর ১লা ডিসেম্বর জমিটি রেজিস্ট্রি হয়। এরপর পুরো জমিতে সীমানা প্রাচীর তুলে কবরস্থান ও মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে গভীর নলকূপ, মরদেহ গোসল করানোর ঘর রয়েছে। প্রধান সড়ক থেকে কবরে যাওয়ার জন্য রাস্তাও সংস্কার করে দেওয়া হয়।

ভূমিহীন গণকবর ও সমাজসেবা সংস্থার সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, নদী ভাঙা মানুষের নির্দিষ্ট কোনো কবরস্থান ছিল না। এখন আমরা কবরস্থান এবং মসজিদ দুটোই পেয়েছি। এতে আমরা আনন্দিত। আইজিপি স্যার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।

লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এএইচএম কামরুজ্জামান জানান, সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম চরমনসা গ্রামে জমি কিনে কবরস্থানটি করা হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে চার শতাধিক মানুষকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মানবিক কারণে আইজিপির উদ্যোগে জেলা পুলিশ কাজটি বাস্তবায়ন করেছে।

এমন একটি মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করায় স্থানীয় ভূমিহীন বাসিন্দারা সাধুবাদ জানিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে তার মঙ্গল কামনা করে দোয়া করেছেন।