এ বছর পদ্ম পুরস্কারের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীসহ বহু গণ্যমান্য মানুষ। কিন্তু হঠাৎ প্রচারের সবটুকু আলো শুষে নিলেন কর্ণাটকের এক আদিবাসী বৃদ্ধা। নাম তুলসী গৌড়া।
হাল্কাকি উপজাতির এই নারী আদিবাসী পোশাকের পাশাপাশি নিজেদের রীতি মেনে খালি পায়েই হাজির হন পদ্মশ্রী পুরস্কার নিতে। তাকে দেখে একসঙ্গে করজোড়ে সম্মান জানান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সেসব মুহূর্তের ছবি এখন ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। এমনকি সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীও।
পথ চলতে চলতে তুলসীর বয়স এখন ৭৭। এর মধ্যে গত ছয় দশক গাছ লাগানোকেই বানিয়েছেন জীবনের মন্ত্র। বাড়িয়েছেন সবুজের সমারোহ। তথাকথিত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারেননি, তবু প্রকৃতির দানের প্রতিদান দেওয়ার পাঠ তার হয়েছে।
গত ৬০ বছরে কম করে হলেও ৩০ হাজার গাছের চারা লাগিয়েছেন, সন্তানস্নেহে লালন-পালন করে বড় করেছেন সেগুলোকে। এসব করতে গিয়ে দিনে দিনে বেড়েছে তার গাছগাছালি সম্পর্কে জ্ঞান। পেয়েছেন ‘অরণ্যের বিশ্বকোষ’ (এনসাইক্লোপিডিয়া অব ফরেস্ট) উপাধি। এবার পেলেন পদ্মশ্রী সম্মানও।
মান্যগণ্য ব্যক্তিত্বের ভিড়েও সোমবার (৮ নভেম্বর) পুরস্কারের মঞ্চে ঠিকই আপন আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন এ আদিবাসী নারী। এত অর্জনেও ভোলেননি নিজের রীতি-রেওয়াজ, তাই খালি পায়ে প্রেসিডেন্টের হাত থেকে পুরস্কার নিতেও কোনো দ্বিধা হয়নি তার। ২১ শতকের আধুনিক যুগে এসেও বৃদ্ধা যেন মনে করিয়ে দিলেন প্রাচীন ভারতের কথা, মাটি ও মানুষের পরম সম্পর্কের কথা।