মামলা জিতিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জি.এম সাইফুর রহমান মুরাদের যোগসাজশে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ ফজলুর রহমান (এফ. আর.) খানের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থীর কাছ থেকে কয়েক দফায় ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে সম্প্রতি মোঃ আশরাফুল হক নামের এক বিচারপ্রার্থী ডিএজি এফ আর খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। উক্ত অভিযোগের অনুলিপি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম –এর হাতে এসেছে।
লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে আশরাফুল হক দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের পরিচালকের বিরুদ্ধে একটি সি. আর মামলা দায়ের করেন। সে মামলার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে বিবাদী পক্ষ ফৌজদারি মিস মোকদ্দমা করেন।
পরে মামলা লড়তে আইনজীবী নিয়োগের একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর সাথে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জি.এম সাইফুর রহমান মুরাদের যোগাযোগ হয়। ব্যারিস্টার মুরাদ মামলাটিতে ৭ দিনের মধ্যে আশরাফুল হকের অনুকূলে রায়ের ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন। আর এ ব্যাপারে তাঁকে সহযোগিতা করবেন খোদ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ ফজলুর রহমান।
তবে এক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকা দাবী করা হয়। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ২ বিচারপতির জন্য ১০ লাখ, ডিএজি এফ আর খানের জন্য ৫ লাখ এবং ব্যারিস্টার সাইফুর রহমানের জন্য ১ লাখ টাকা দিতে হবে।
এভাবে কয়েক ধাপে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল (তখন তিনি জীবিত ছিলেন) মাহবুবে আলমের কথা বলে আরও ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে মামলা নিষ্পত্তি তো দূরের কথা সেই মামলা আজো উচ্চ আদালতে ঝুলে আছে। পরে ভুক্তভোগী টাকা ফেরত চাইলে বাধে অন্য বিপত্তি। এবার মামলায় হারিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে অতিরিক্ত টাকা দাবী করা হয়।
এমতাবস্থায় উক্ত মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে এফ আর খানকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য কোন সৎ আইন কর্মকর্তা নিয়োগ করে, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করার আর্জি জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন ওই বিচারপ্রার্থী।
একইসঙ্গে বিচারপতিদের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা ২৬ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আশারফুল হক ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, “সরকারি আইনজীবীদের এমন প্রতারণার বিচার চাই। বিচারপ্রার্থীদের এমন হয়রানি যেন আর না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
ভুক্তভোগীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, “সরকারি আইন কর্মকর্তাদের অভিভাবক অ্যাটর্নি অফিস। আমরা অভিযোগ করেছি। আশা করি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ. আর. খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে তিনি বলেন, “ভালো কাজ করতে গেলে নানান অভিযোগ শোনা যায়। আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।”
এমন কোন কাজ তিনি করেননি উল্লেখ করে জানান, “আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছি যদি কেউ এমন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিধিবদ্ধ নিয়মে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তা মাথা পেতে নেব।”