এক মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা চাওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে তাঁকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের ওপর জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আজ পিটিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামাল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি ও বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী একেএম আলমগীর পারভেজ ভূঁইয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের ঘটনায় এক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুদক। কিন্তু তদন্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে।
পরে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন চেয়ে দুদকে বারবার আবেদন জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি ওই দম্পতি। এরপর বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন তারা।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য জানাতে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ মো. আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগমকে নোটিশ দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন।
আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার ঢাকা সদরের সাবেক সাব রেজিস্ট্রার এবং বর্তমানে তিনি পিরোজপুরের জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। দুদকের (ঢাকা-১) উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওই নোটিশ দেন।
তবে নোটিশের উপযুক্ত জবাব না মেলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর ওই দম্পতিকে আসামি করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে মামলা করে দুদক।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ২৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন, ৯০ লাখ ১২ হাজার ৭৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা দখল রাখার অভিযোগে মামলাটি করেন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থ দিয়ে তার নিজ নামে সম্পদ অর্জন করেন। এই সম্পদ নিজ দখলে রেখে আসামি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।