জাতীয় সংসদে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল, ২০২১ সহ দুটি বিল পাস করা হয়েছে। সংসদে পাস হওয়া অন্য বিলটি হচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ( ভ্রমণ ভাতা) বিল, ২০২১।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল ২০২১
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিলে বিদ্যমান সুপ্রিম কোর্ট জাজেজ রিম্যুনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস অধ্যাদেশ রহিত করে নতুন করে আইন প্রণয়নে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়।
বিলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির মাসিক বেতন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, আপিল বিভাগের বিচারপতির ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির ৯৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া বিলে বিচারপতিদের মূল বেতনের শতকরা ৫০ ভাগ বাড়ি ভাড়া, প্রতি ৩ বছর পর পর এক মাসের শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি এবং ১ মাসের বেতন, বছরে দু’টি উৎসব ভাতা, বছরে একবার শতকরা ২০ ভাগ নববর্ষ ভাতা, নিয়ামক ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্যের বিধানের করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বিলে বিচারকদের বেতন না বাড়লেও কিছু ভাতা যোগ হয়েছে সেখানে। নতুন বিলে প্রধান বিচারপতির ‘নিয়ামক ভাতা’ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি মাসে ১২ হাজার টাকা হারে এই ভাতা পান। নতুন আইনে তা ২৫ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে।
তবে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকরা আগের মতই আট হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা পাবেন।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের একজন বিচারক তাদের বাসায় একজন বাবুর্চির পরিবর্তে প্রতি মাসে ১৬ হাজার টাকা করে ‘কুক ভাতা’ পাবেন।
তবে বর্তমান আইনে একজন বিচারক ‘ডমেস্টিক এইড’ ভাতা পান। নতুন আইনে সেটা রাখা হয়নি।
বিলে বলা হয়েছে, বিচারকরা তাদের ইয়ারমার্কড, স্বতন্ত্র, একক বাসা, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী পদের সুবিধার পরিবর্তে প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা সিকিউরিটি ভাতা প্রাপ্য হবেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ( ভ্রমণ ভাতা) বিল, ২০২১
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিলে বিচারপতিদের নির্দিষ্ট হারে ভ্রমণ ভাতা প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়। ১৯৭৬ সালের এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত ভাতা বাড়ানোর জন্য বিলটি পাস করা হয়েছে।
বর্তমানে উচ্চ আদালতের একজন বিচারক সুপ্রিক কোর্ট সদরদপ্তরের বাইরে দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক চারশ টাকা করে ভাতা পান। বিলে তা এক হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, কোনো বিচারক দায়িত্ব পালনে সদর দপ্তরের বাইরে থাকলে ছুটির দিনসহ দৈনিক ১৪০০ টাকা হারে ভাতা পাবেন। এছাড়া রেলপথ, নৌপথ ও আকাশপথে ভ্রমণের জন্যও বিভিন্ন হারে ভাতার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, যে ক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য একাধিক যাত্রাপথ রয়েছে, সেক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত এবং স্বল্প ব্যয়ের ভ্রমণ ভাতা দাবি করতে হবে।
কোনো বিচারক ছুটিতে গেলে, ছুটি থেকে ফিরে এলে বা বিদেশে ছুটি কাটিয়ে আবার দায়িত্বে যোগ দেওয়ার জন্য ফিরলে, বা অবসরের পর নিজের ঠিকানায় ফেরার সময় কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তাও বলা হয়েছে বিলে।
বিলে বলা হয়েছে, সড়কপথে ভ্রমণের জন্য একজন বিচারক প্রতি কিলোমিটারে তিন টাকা ৭৫ পয়সা হারে ভাতা পাবেন। বর্তমানে এই ভাতার হার প্রতি কিলোমিটার এক টাকা।
এর আগে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিল দু’টি পাসের প্রস্তাব করেন। জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক, ফখরুল ইনাম, রুস্তম আলী ফরাজী, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ, মোশাররফ হোসেন, রুমীন ফারহানা, বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে প্রথম বিলে একটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়। বাকি প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।