দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ধর্ষণ সংক্রান্ত ঘটনার সংখ্যা ১ হাজার ১৮২টি। এর মধ্যে ধর্ষণ ৯৫৫টি, গণধর্ষণ ২২০টি, ধর্ষণের চেষ্টা ২৫৯টি। সে হিসেবে প্রতিদিন প্রায় চারটি ধর্ষণ বিষয়ক ঘটনা ঘটেছে। একই সময় প্রায় ৮৪ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। রাস্তা, যানবাহনে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, কর্মক্ষেত্রে এমনকি বাড়িতে এসব যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে।
‘বাংলাদেশে যৌন হয়রানি: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় দৈনিক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এ তথ্য দিয়েছে সংগঠনটি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনডব্লিউএলএ -এর আয়োজনে বুধবার (১ ডিসেম্বর) এই গোল টেবিল আলোচনা হয়। গোলটেবিলে এসব তথ্য তুলে ধরে বিএনডব্লিউএলএর সভাপতি আইনজীবী সালমা আলী বলেন, বর্তমানে দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিটি ক্ষেত্রেই উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এখনই সময় নারীদের রুখে দাঁড়ানোর।
বিশিষ্ট সাংবাদিক জাইমা ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিদিনই দেখছি নারীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দেশের প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রেই যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নিশ্চিত ও কার্যকর করা গেলে নারীদের প্রতি এই ধরনের সহিংসতার ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ট্রেজারার ডক্টর রাশেদা আক্তার বলেন, নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হলেও চাকরি হারানোর ভয়ে, সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে অভিযোগ করতে পারে না। এক্ষেত্রে নারীর প্রতি সমাজের সবার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভিন বলেন, বাংলাদেশে যৌন হয়রানির বর্তমান পরিস্থিতিতে সারাদেশে নারীরা অসহায়। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সোচ্চার হওয়ার মতো কাউকে তারা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি সমসাময়িক যৌন হয়রানির ও সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং বর্তমানে সংঘটিত সব যৌন হয়রানি ও সহিংসতার অপরাধের জন্য দায়ীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার দাবি করছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সদস্য আইনজীবী ও কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।