কাজী শরীফ: বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি বলতেই একধরণের করুণার ছবি ভেসে ওঠে অনেকের চোখে। বলতে বাধা নেই আমিও আমার অধিকাংশ লেখায় নিজেকে গরীব দেশের মানুষ হিসেবে আখ্যা দিই।
স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানের মোট অর্থনীতির মাত্র ২৩ শতাংশের ভাগিদার ছিলাম আমরা। দেশ স্বাধীনের পর যেখানে ২ জিডিপি ছিল আমাদের সেখানে ৬ এর উপর জিডিপি এখন আমাদের ডাল ভাত!
আমাদের তৈরী পোশাকখাত অন্য দেশের জন্য উদাহরণ। আমাদের সাকিব, তামিম, মুস্তাফিজ, সিদ্দিকুররা সারা দুনিয়ায় পরিচিত। আমাদের শাকিব খানের শিডিউল পেতে তীর্থেরকাক হয়ে বসে আছে টলিউডের পরিচালকেরা। আমাদের জয়া আহসানকে পেয়ে কৌশিক গাঙ্গুলি, সৃজিত মুখার্জি, অরিন্দম শীলদের মত পরিচালক ধন্য।
আমাদের রুনা লায়লা ফারাক্কা সমস্যা সমাধানে খুশবন্ত সিং’র মতে মূল নিয়ামক। মানে তাকে পেলে নাকি ভারত ফারাক্কা বাঁধ তুলতেও আপত্তি করবে না! আমাদের নিয়াজ মোরশেদ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার। আমাদের বন্যা আপার রবীন্দ্রসংগীত অবশ্য শ্রব্য ও রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পীদের কাছে আরাধনার মত।
আমাদের ব্যান্ডসংগীত কলকাতার শিল্পীদের কাছে প্রার্থনার মত। আমাদের বাচ্চু ভাই, জেমস ভাই, শাফিন ভাইরা জগদ্বিখ্যাত। আমাদের পার্থপ্রতীম মজুমদার মুকাভিনয়ে বিশ্বসেরাদের একজন!
আমাদের উন্নতি এখন সব জায়গায়। যা নেই তারও সমাধান হবে ইনশাল্লাহ। এ কৃতিত্ব বাংলাদেশের আপামর জনগণের। এ প্রাপ্তি রথীন্দ্রনাথ রায়ের গানের মতো –
“আমারই দেশ সব মানুষের…
কৃষকের, শ্রমিকের, মজুরের,
গরীবের, নি:স্বের, ফকিরের..”
যারা এখনো বাংলাদেশকে নিয়ে নাক শিটকাচ্ছেন তাদের মনের দারিদ্র্য কখনোই যাবে না! বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা যখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন তখন কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক তিনি বিশ্বাস করেছিলেন এটা সম্ভব।
আমি গরীব দেশের মানুষ হতে পারি। কিন্তু আমার মন গরীব না। অভিনন্দন বাংলাদেশ। বিজয়ের মাসে এদেশের সন্তান হতে পেরে আমি গর্বিত।
লেখক: মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম।