উচ্চ আদাললতের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। পাশাপাশি সরকারের প্রতি আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থনের দাবি জানায় সংগঠনটি।
আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে এসব দাবি তুলে ধরেন ওই সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট।
প্লাটফর্মের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে—
- কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন ও কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে;
- আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় সে জন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করা;
- যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করা এবং
- নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতি চর্চা করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আশরাফ উদ্দিন মুকুট বলেন, দেশে বিদ্যমান আইনের পরেও কেন কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন প্রয়োজন সে বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট তার রায়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। রায়ে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে—কোর্টের এই আদেশ ও নির্দেশনাগুলো জাতীয় সংসদ কর্তৃক এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ও কার্যকর আইন প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অনুসৃত ও পরিপালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা গেছে হাইকোর্ট যে ১১টি নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলোও কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি।
সরকারের প্রতি আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থনের আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে এই কনভেনশনটি বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত হলে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুদৃঢ় করবে। বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে। সেজন্য প্রয়োজন, এই কনভেনশনটি যথাযথ পর্যালোচনা করে অনুস্বাক্ষরের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সীমা জহুর, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাজু, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, মনডিয়াল এফএনভি’র কনসালটেন্ট মো. শাহীনুর রহমান, কর্মজীবী নারীর সমন্বয়ক কাজী গুলশান আরা দিপা প্রমুখ।