দুর্নীতি মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদকে বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করে আজ বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিমের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তবে তিনি এ মামলায় যে ১৬ মাস হাজতবাস করেছেন সেই সময়কালটাই সাজা হিসেবে গণ্য হবে। ফলে তাকে নতুন করে আর জেলে যেতে হবে না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
একইসঙ্গে আদালত মামলার অপর দুই আসামি ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান ও গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেকের সাজাও বহাল রেখেছেন। তাদেরকেও নতুন করে আর জেলে যেতে হবে না।
আদালতে এই সংসদ সদস্যের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মিজানুর রহমান ও এইচ এম সানজীদ সিদ্দিকী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
বিচারিক আদালতের রায়
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর এমপি হারুন অর রশিদ এমপিকে পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রি করে আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় তাকে এ সাজা দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় আরও দুই জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন— ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান ও গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেক।
মামলায় চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এনায়েতুর রহমান বাপ্পীকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও একলাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার অপর আসামি ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়। উচ্চ আদালত আসামিদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে অর্থ দণ্ড স্থগিত করেন। পাশাপাশি তাদের জামিন দেন।
মামলার অভিযোগে যা বলা হয়
বিএনপি জোট সরকারের সময় এমপি থাকাকালে ২০০৫ সালে ব্রিটেন থেকে একটি হ্যামার ব্র্যান্ডের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কেনেন। গাড়িটি তিনি পরে ইশতিয়াক সাদেকের কাছে ৯৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। এরপর সাদেক গাড়িটি চ্যানেল নাইনের এমডি বাপ্পীর কাছে বিক্রি করেন।
নিয়ম অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত গাড়ি তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু এমপি হারুন শুল্ক না দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এই অভিযোগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ এমপি হারুনসহ তিনজনের নামে এ মামলা দায়ের করেন তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক ইউনুস আলী।
এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৮ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। একই বছর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
উল্লেখ্য, হারুন অর রশীদ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন।