ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলে বিবাহিতরা থাকতে পারবে, এমন বিধান বাতিল চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ৬ জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রেজিস্ট্রিডাক যোগে নোটিশটি প্রেরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর এবং শামসুন্নাহার, কুয়েত-মৈত্রী ও সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্টকে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়।
নোটিশে বিবাহিত ছাত্রীদের জন্যে এমন নিয়ম নারীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পথে প্রতিবন্ধকতা এবং সংবিধানের সাংঘর্ষিক উল্লেখ বলে করা হয়েছে। সেই সাথে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্রী হলে বিবাহিত হওয়ার কারণে কতিপয় ছাত্রীর সিট বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এমন বৈষম্যমূলক বিধান গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হচ্ছে।
এছাড়া শামসুন্নাহার হলের আবাসিক ছাত্রীদের সিট বণ্টন সম্পর্কিত ও শৃঙ্খলামূলক নিয়মবিধির ১৬ নং বিধি উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয় উক্ত বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত শিক্ষার্থীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
প্রসঙ্গত, সিট বণ্টন সম্পর্কিত ও শৃঙ্খলামূলক নিয়মবিধির ওই বিধি তে বলা হয়েছে,
“কোন ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবে। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধুমাত্র বিশেষ ক্ষেত্রে, বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবে না।”
নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) ও (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করবে। বিবাহিত ছাত্রীদের জন্যে এমন নিয়ম নারীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পথে প্রতিবন্ধকতা এবং সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির।