মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ নিরাপদ দেশ সমূহে ট্রান্সফারের (স্থানান্তর) দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দেশের স্বার্থ রক্ষায় ও দেশের জনগণকে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি থেকে বাঁচানোর জন্য নোটিশটি প্রেরণ করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ প্রেরণ করেন। নোটিশে অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিবাদী করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান নোটিশ প্রেরণের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নোটিশ পাওয়ার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় এই বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করা হবে।
নোটিশে যা বলা হয়েছে
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারী ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব, র্যাবের প্রাক্তন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সেনাপ্রধানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
আইনি নোটিশে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়, সন্ত্রাস দমন, মাদক দ্রব্য ধ্বংস ও মানব পাচার রোধে র্যাবের অসামান্য অবদান রয়েছে। যদিও র্যাবের বিভিন্ন অপারেশন চলাকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভুল ও কিছু মানবীয় ভুলের কারণে কতিপয় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছে। তথাপি বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের অসমান্য ভূমিকা রয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ভূ-রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যে কারণে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বর্তমানে র্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের একটি অংশবিশেষ ।
বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখার জন্য তাদের অর্থ-সম্পদ ফ্রিজিং/বাজেয়াপ্ত করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উল্লেখযোগ্য অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হয় । বর্তমানে বাংলাদেশেকে নিয়ে যেভাবে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বিস্তার লাভ করছে তাতে নিকট ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংরক্ষিত বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ ফ্রিজিং/বাজেয়াপ্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে । এরূপ হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের জনগণেরকে অবর্ণীয় কষ্টের সন্মুখিন হতে হবে ।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ ফরেন রিজার্ভ রক্ষার জন্য নূন্যতম কিছু ফরেন রিজার্ভ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রেখে বাদবাকি অর্থ বিভিন্ন নিরাপদ দেশে সংরক্ষণ করতে হবে এবং স্বর্ণ আকারে রাখতে হবে। এছাড়া যেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বেশি সেসব দেশের সাথে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন করতে হবে। যেমন চিনের সাথে বানিজ্যে চীনের মুদ্রা রেন্মিন্বি, ভারতের সাথে বাণিজ্যে রুপি ব্যবহার করতে হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।