অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অস্বাভাবিক বিমান ভাড়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে নোটিশে প্রবাসে গমনেচ্ছু শ্রমিকদের বিমান ভাড়া হাতের নাগালে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সিলেটের কানাইঘাটের আট ব্যক্তির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির এ নোটিশ পাঠান।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণব্যুরোর মহাপরিচালক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সভাপতি বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে বিবাদীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় বাদী পক্ষ উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে যা বলা হয়
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায় বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যেতে বিমান ভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। সময় নিউজের একটি সংবাদে দেখা যাচ্ছে ‘বিমান ভাড়া বেড়েছে ৪ গুণ’। ঢাকা থেকে দুইবায়ের পূর্বের বিমান ভাড়া ৩০ হাজার টাকা হলেও এখন তা ৯০ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। ঢাকা থেকে সৌদিআরব রুটের ৪৫ হাজার টাকার বিমান টিকেট এখন এক লাখ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণকারী যাত্রীদের করা ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে যাতে দেখা যায়, টিকেটের সংকট থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ফ্লাইটে বিপুলসংখ্যক আসন ফাঁকা যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, টিকেট সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশ বিমান ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। টিকেট কারসাজির মাধ্যমে উচ্চ টিকেট মূল্যের কারণে একদিকে প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না, অপরদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ব বিমান সংস্থা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
টিকেটের উচ্চমূল্যের কারণে শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়া নিয়ে নোটিশে বলা হয়, অনেক শ্রমিক তাদের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না এবং দেশ বঞ্চিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজমান।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২১ উপলক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিদেশের শ্রমবাজার নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘চিল্লাতে চিল্লাতে, চিঠি দিয়ে দিতে এ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি অপারগ’। বর্তমান অরাজক পরিস্থিতি বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রবাসীদের কল্যাণ ও সুরক্ষায় গৃহীত মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর অবশ্যম্ভাবী।