দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গনের অন্যতম প্রিয়মুখ এবং আইনজীবী ও অসহায় মানুষের সহযোগিতায় ‘উদারহস্ত’ খ্যাত আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট শাহ্ মঞ্জুরুল হকের ৫২তম জন্মদিন আজ। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বছর খানেক আগে ১৯৭০ সালের আজকের দিনে (১ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
শিক্ষা ও কর্মজীবন
শৈশব থেকেই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করা মঞ্জুরুল হক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং এলএলএম সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৯৫ সালে আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ লাভ করেন। পরবর্তী বছর ১৯৯৬ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯৭ সাল থেকে দেশের প্রথিতযশা আইনজীবী প্রয়াত ব্যারিস্টার রফিকুল হকের জুনিয়র হিসেবে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ এক দশক ব্যারিস্টার রফিকুল হকের সান্নিধ্যে থেকে আইন পেশার নানান খুঁটিনাটি বিষয়েও প্রায়োগিক জ্ঞানার্জন করেছেন। এরপর ২০১১ সালের ১২ মে আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত হন। প্রায় ২৭ বছর আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন। এসময় দেশের শীর্ষ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির আইনজীবী হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
পেশাগত জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন শাহ্ মনজুরুল হক। বেক্সিমকো গ্রুপ, ইষ্টার্ণ হাউজিং লিমিটেড, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিল, রিয়েল এ্যাস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (রিহ্যাব), ইন্সটিটিউট অফ চ্যার্টাড সিকিউরিটিজ অফ বাংলাদেশ (আইসিএসবি), বোর্ড অফ এয়ার লাইন্স রিপ্রেসেনটেটিভ (বিএআর), শামসুল আলামিন গ্রুপ, লোটাস কামাল গ্রুপ, কনটিনেন্টাল ট্রেডার্সের আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে আইন বিভাগে শিক্ষকতাও করেছেন। ঢাকায় অবস্থিত মেট্রোপলিস আইডিয়াল ল’ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
জনহিতকর কর্মকান্ড
ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি গড়ে তুলেছেন জুবায়দা ফাউন্ডেশন। তার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দুঃখ লাঘবে এবং উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজে অবদান রেখে যাচ্ছে।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যক্তিগত অনুদান ও সহায়তা প্রদান করে আসছেন তিনি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- নিজস্ব অর্থায়নে সুপ্রিম কোর্ট বারের ব্যাডমিন্টন ক্লাব প্রতিষ্ঠা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বসার জন্য হল রুমগুলোর আধুনিকায়নে আর্থিক অনুদান প্রদান, সপ্তম ল’ইয়ার্স ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপে বাংলাদেশ দলের স্পন্সরশীপ করা, সমিতির মসজিদে দু’বার এসি বিতরণ, নারী হলরুমে এসিসহ আরও কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় সরবরাহ করেছেন তিনি।
আইনজীবী ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সেবায় আর্থিক সহায়তা, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে শীতবস্ত্র ও খাদ্য বিতরণ, শিক্ষার উন্নয়নে দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে স্ব-উদ্যোগে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রেখে আসছেন। এছাড়া ক্যান্সার, লিভার, কিডনিসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত আইনজীবীদের চিকিৎসার্থে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন উদারহস্তের এই মানুষটি।
রাজনীতি
বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন অনেক দিন হলো। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনসহ জনহিতকর নানা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এই আইনজীবী নেতা। দরজায় কড়া নাড়ছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২০২৩ বর্ষের কার্যকরী কমিটির নির্বাচন। আসন্ন এ নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন তিনি।