এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৪৩ লাখ ১০ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক (বর্তমানে রবখাস্তকৃত) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী সরদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে রোববার (৬ মার্চ) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এজাহারে বলা হয়, ইউসুফ সরদার দুদকে জমা দেওয়া হিসাব বিবরণীতে ৪৩ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। অসৎ উপায়ে অর্জিত ও জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে তার নামে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ইউসুফ সরদারের সম্পদ বিবরণীতে জমি ও প্লট কেনা, উপহার হিসেবে পাওয়া স্বর্ণালংকার, ব্যাংক ও আর্থিক সমিতিতে স্থিতি, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ নানা সম্পদ পাওয়া গেছে। স্থাবর-অস্থাবরসহ মোট ১ কোটি ৭৩ লাখ ৯১ হাজার টাকার সম্পদের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
জানা গেছে, গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে আসামির সম্পদ বিবরণী চায় দুদক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের জুনে নির্ধারিত ফরমে সম্পদ বিবরণী জমা দেন ডিএসসিসির সাবেক এই কর্মকর্তা।
এতে দেখা যায়, আসামি জমি ও প্লট ক্রয়, স্থাবর সম্পদ এবং উপহার হিসেবে প্রাপ্ত স্বর্ণালংকার ছাড়া ব্যাংক স্থিতি, আশা সমিতিতে স্থিতি, আসবাবপত্র ক্রয়, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ক্রয়, অন্যান্য বিনিয়োগ এবং হাতে নগদ ও অন্যান্যসহ মোট ১ কোটি ৭৩ লাখ ৯১ হাজার ৭৯৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা প্রদান করেন।
তবে অনুসন্ধানে তার ২ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৫৮২ টাকার সম্পদ পায় দুদক। অর্থাৎ তিনি ৪৩ লাখ ১০ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে জানায় দুদক।
সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদান করায় তার বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউসুফ আলী সরদারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ডিএসসিসির কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালের ১৭ মে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ এনে ইউসুফ আলী সরদারকে চাকরিচ্যুত করেন।