হিজাব পরা ইসলাম ধর্মের জন্য ‘অপরিহার্য’ নয় বলে রায় দিয়েছে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শ্রেণীকক্ষে হিজাব নিষিদ্ধ করে রাজ্য সরকারের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছে আদালত।
কয়েক মাস ধরে হিজাব বিতর্কের পর এই রায় দিয়েছে আদালত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। কর্নাটক হাইকোর্টের এই আদেশ ভারত জুড়ে প্রচলিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এ গণমাধ্যমটি।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছেন, সরকারি স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীরা কী পোশাক পরে আসবে, সেই ইউনিফর্ম কোড বেঁধে দেওয়ার পূর্ণ অধিকার কর্তৃপক্ষের আছে।
ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল ২৫-এ যে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার দেয়, হিজাব পরার বিষয়টি তার আওতায় পড়ে না বলেও আদালত মন্তব্য করেছে।
গত জানুয়ারিতে কর্নাটকের এক কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব পরায় মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। এনিয়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের মুখে রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বেশ কিছুদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কয়েক মুসলিম শিক্ষার্থী আদালতে পিটিশন আবেদন করে যুক্তি দেয় ভারতের সংবিধান তাদের হিজাব পরার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত বলেছে, শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্মের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার এখতিয়ার রাজ্য সরকারের রয়েছে।
সোমবার রায় ঘোষণার আগে সরকার বিক্ষোভ ঠেকাতে বড় জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং কয়েকটি এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে কর্নাটক হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হবে।
ভারতের হাজার হাজার মানুষ আদালতের শুনানির ওপর নিবিড় নজর রাখেন। রিট আবেদনটি প্রথমে শোনা বিচারক গত ৯ ফেব্রুয়ারি মামলাটি একটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। ওই সময়ে তিনি কারণ জানান, এই প্রশ্নের বিশালতা বিতর্কিত বিষয়।
ওই বৃহত্তর বেঞ্চ অন্তর্বর্তী এক আদেশে জানায়, চূড়ান্ত রায়ের আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় পোশাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে না। এই অন্তর্বর্তী আদেশের কারণে অনেক মুসলিম শিক্ষার্থী ক্লাসে যাওয়া বাদ দেয়। অনেকে পরীক্ষাতেও অংশ নেয়নি।