সিলেটে ব্লগার ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তবে এ মামলায় খালাস পেয়েছে একজন।
আজ বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার আসামি হলেন- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বীরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)।
এ ছাড়া সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০) নামের এক আসামি খালাস পেয়েছেন।
সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মুমিনুর রহমান চার আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের খালাস পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন অ্যাডভোকেট আবদুল আহাদ।
রায়ের পর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, নৃশংসভাবে অনন্তকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য মৃত্যুদণ্ডই সর্বোচ্চ শাস্তি। তবে ফারাবীকে কেন আদালত খালাস দিয়েছেন, সেটা পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর বোঝা যাবে। পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পেয়ে অনন্তের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল আহাদ জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল করবেন।
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ২ আসামি সফিউর রহমান ফারাবী ও আবুল খায়ের রশীদ আহমেদকে আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে, গত ১৪ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ দিন নির্ধারণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১২ মে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সিলেট নগরের সুবিদবাজারের নুরানী আবাসিক এলাকার বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে রাস্তার মধ্যে দিনদুপুরে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে আনসার বাংলা টিম নামের একটি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন।
পরে নিহত ব্যক্তির বড় ভাই রতেশ্বর দাশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় চারজনকে আসামি করে মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। ২০১৭ সালের ৯ মে সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী ছয়জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- সফিউর রহমান ফারাবী, মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী, আবুল খায়ের রশীদ আহমেদ, আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন, হারুনুর রশীদ ও ফয়সল আহমদ।
আসামিদের মধ্যে ফারাবী ও আবুল খায়ের বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অপর আসামি মান্নান রাহী কারান্তরীণ অবস্থায় মারা গেছেন। অন্য তিন আসামি প্রথম থেকেই পলাতক।