হাইকোর্ট এবং প্রয়াত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি
হাইকোর্ট এবং প্রয়াত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি

সাগর-রুনি হত্যা: আসামিদের শনাক্তে রুল ১০ বছর পর হাইকোর্টের শুনানিতে উঠছে

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেফতার নিয়ে করা রিট শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেছেন হাইকোর্ট। নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় আসামিদের শনাক্ত নিয়ে জারি করা রুল ১০ বছর পর শুনানিতে উঠছে।

আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) রিট আবেদনটি কার্যলিকায় আসার পর বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) হাইকোর্টের একই বেঞ্চে রিটের শুনানি হতে পারে।

আদালতে রিট আবেদেনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরেসদ।

পরে মনজিল মোরসেদ জানান, সাগর-রুনি মামলার তদন্ত সঠিকভাবে করা এবং আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য ২০১২ সালে আমরা একটা রিট দায়ের করেছিলাম। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিল। রুলে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল।

রিট আবেদেনের পক্ষের এই আইনজীবী বলেন, এরপর আমাদের পৃথক একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত র‌্যাবের কাছে চলে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই ১০ বছরে এ মামলার চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনও তদন্ত পর্যায়ে রয়ে গেছে।

আইনজীবী মনজিল মোরেসদ বলেন, আমরা চাচ্ছি তদন্ত যেন তাড়িাতাড়ি শেষ করে প্রকৃত আসামিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা যায়। ১০ বছর আগে জারি করা রুলের শুনানির জন্য আমরা আজকে কোর্টে আবেদন করেছিলাম। আদালত রুল শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আগামীকাল মামলাটি তালিকায় আসলে শুনানি হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার এক কর্মকর্তা। ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর।

হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত ও আসামি গ্রেফতার নিয়ে জনস্বার্থে রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সেই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২৮ ফেব্রুয়ারি জারি করা রুলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের খুনিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব)। সেই থেকে প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।

সবশেষে ২৭ মার্চ এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত দিনে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা। তাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আগামী ২৬ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন। এনিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ৮৭ বার পেছালো।

মামলায় আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।