স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মালেক ও তার স্ত্রীর বিচার শুরু

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মালেক ও তার স্ত্রীর বিচার শুরু

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মো. আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (১১ মে) ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৭ জুন দিন ধার্য করেন আদালত।

দুটি মামলার প্রত্যেকটিতেই মালেক আসামি এবং একটিতে তার সঙ্গে স্ত্রী নার্গিসকেও আসামি করা হয়।

গত ১৮ এপ্রিল দুই আসামির পক্ষে অব্যাহতির আবেদনের শুনানি করেন তাদের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম। দুদকের পক্ষ থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আর্জি জানানো হয়। শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১১ মে দিন ধার্য করেন আদালত।

সে অনুযায়ী বিচারক আজ অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আসামিরা দোষী না নির্দোষ জানতে চান। এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

এদিন আসামিপক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৯ মে দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম ইসলাম বাংলানিউজকে এই তথ্য জানান।

মামলার বিবরণ

২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুটি মামলা করেন।

প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চাকরিকালে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে মোট এক কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা বা ভিত্তিহীন ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ও তা ভোগদখলে রেখে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

অপর মামলায় মামলায় আবদুল মালেকসহ তার স্ত্রী নার্গিস বেগমকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ পরিমাণ সম্পদ আসামি নার্গিস বেগমের ভোগদখলে রাখার ক্ষেত্রে স্বামী আবদুল মালেক প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়।

২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর এই মামলায় নার্গিস আক্তার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। সেই আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকায় গাড়িচালক আব্দুল মালেককে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়। গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় মালেককে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।