রাজশাহীতে গভীর রাতে একজন বিচারকের গাড়ির পথরোধ করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে কয়েকজন ছিনতাইকারী। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বুদ্ধি ও কৌশল খাটিয়ে বিচারক তিন কিশোর ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন। পরে পুলিশ ডেকে তাদের সোপর্দ করা হয়।
রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার মদিনানগর এলাকায় গত বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, সাহসী ওই বিচারকের নাম এমএম হুমায়ুন কবীর। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় তার গ্রামের বাড়ি। তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি বিচারিক আদালতে কর্মরত।
রাতের ঘটনার বিবরণ দিয়ে পরদিন শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে ছিনতাইকারীদের ছবি পোস্ট করেছেন। বিচারক এসএম হুমায়ুন কবীর ফেসবুকে লিখেছেন-
‘নেশাগ্রস্ত থেকে ছিনতাইকারী হয়ে যাওয়া। বয়স আন্ডার দ্য ম্যাচুউরিটি। ছিনতাইয়ের চেষ্টায় আমার গাড়িকে টার্গেট করা, হাতেনাতে ধৃত এবং পুলিশে সোপর্দ করা। তারা বুঝতে পারেনি প্রটেকশন (পিস্তল) আমার সঙ্গেই ছিল। নেশার যন্ত্রণায় নিজের হাত নিজে কেটেছে তারা। গতকাল (বৃহস্পতিবার রাতে) ঘটনাটি রাজশাহী চন্দ্রিমা থানার পাশেই ঘটেছে।’
অভিভাবকদের সন্তানদের প্রতি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিচারক হুমায়ুন কবীর ফেসবুকে আরও লেখেন, ‘বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিজের সন্তানের প্রতি যত্নবান হোন। খেয়াল রাখুন তারা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মেলামেশা করছে। এটা আপনারই দায়িত্ব এবং কর্তব্য।’
ঘটনা সম্পর্কে আরএমপির চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরান হোসেন বলেন, ‘বিচারককে ছিনতাইয়ের জন্য টার্গেট করা হলে তিনি বেশ ঝুঁকি নিয়েই তিনজনকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন।’
তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং তিনজন কিশোর ছিনতাইকারীকে আটক করে। এ সময় তল্লাশি করা হলে তিনজনের কাছে সাত গ্রাম হেরোইন পাওয়া যায়।
তাই পুলিশ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছে। শুক্রবার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।