দুই আইনজীবীর রিমান্ড: অধস্তন আদালতের নথি তলব করলেন হাইকোর্ট
বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

নথি জালিয়াতি: প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অফিস সহকারীর জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির ঘটনার মামলায় অফিস সহকারী ফাতেমা খাতুনের জামিন প্রশ্নে দুটি রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসময় এই ঘটনাকে বিপজ্জনক ও গুরুতর অপরাধ উল্লেখ করে আসামিকে দয়া করা হবে না বলে মন্তব্য করেন আদালত।

আজ সোমবার (১৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ রুল খারিজ করে এমন মন্তব্য করেন।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ছিলেন পক্ষে আইনজীবী আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মশিউর রহমান।

পরে আমিন উদ্দিন মানিক গণমাধ্যমকে আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের বরাত দিয়ে জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নথি জালিয়াতি জঘন্য অপরাধ। এদের কোনো দয়া না, তাদের সাজা খাটতে হবে। এটি খুব বিপজ্জনক ও গুরুতর অপরাধ।

মামলার বিবরণী‌তে জানা যায়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।

পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে গেলে তিনি ফোনে ছাত্রলীগের নেতা তরিকুলকে জানান যে, এম আবদুস সালাম আজাদ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে অনুমোদন পাননি।

এরপর তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। সেই নথিতে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন তরিকুল।
একই ভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন তিনি। পরে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

ওই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন এবং হস্তান্তরের পর আরেক দফায় তার ছেলের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন বলে মামলায় বলা হয়।

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৫ মে এ বিষয়ে মামলা করেন।