কারাভোগের বদলে নামাজ পড়াসহ কয়েকটি শর্তে আসামির মুক্ত জীবন
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মৌলভীবাজার

কারাভোগের বদলে নামাজ পড়াসহ কয়েকটি শর্তে আসামির মুক্ত জীবন

একটি মারামারির ঘটনায় তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক ব্যক্তিকে নামাজ পড়া ও গাছ রোপণসহ বিভিন্ন শর্তে মুক্ত জীবনের সুযোগ দিয়েছেন আদালত। দুটি নাবালক সন্তান থাকায় এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় কারাগারে না পাঠিয়ে তাঁকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

মৌলভীবাজারের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান মঙ্গলবার (২ আগস্ট) এই রায় প্রদান করেন।

প্রবেশনে মুক্ত ওই ব্যক্তির নাম নুর মিয়া। তিনি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগরের বাসিন্দা।

আদালতে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি সাইফুর রহমান এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. মিনহাজ উদ্দিন।

রায় ঘোষণাকালে আদালত উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, মানুষ অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। বিভিন্ন কারণে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ছোটখাটো অপরাধ হলে তাকে শাস্তি না দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত। কারাগারের বাইরে রেখে সাজাপ্রাপ্তদের সংশোধনের সুযোগ দিতে দীর্ঘদিনের পুরোনো আইনটি সচল করা প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক দেশে এমন আইন চালু রয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগরে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাহমুদ মিয়া নামের একজন বাদী হয়ে নুর মিয়াসহ চারজনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা করেন।

সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত নুর মিয়াকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে আদালত নুর মিয়ার দুই নাবালক সন্তান থাকা এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ প্রদান করেছেন।

‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স ১৯৬০’-এর অধীনে নামাজ পড়া, ১০০টি গাছ রোপণ, নতুন করে কোনো অপরাধে জড়িত না হওয়া, মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা, শান্তি রক্ষা ও সদাচরণ করা, আদালতের নির্দেশমতো হাজির হওয়া ইত্যাদি শর্তে আদালত তাঁকে মুক্তি দেন।

এই শর্তগুলো নুর মিয়াকে তিন বছর ধরে পালন করতে হবে। জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন। প্রবেশন কর্মকর্তা এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করবেন।