বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা জরিমানা
ভারতের জাতীয় পরিবেশ আদালত

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা জরিমানা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা জরিমানা করল দেশটির জাতীয় পরিবেশ আদালত। কঠিন এবং তরল বর্জ্য উত্পাদন। আর, তা থেকে হওয়া রোগের চিকিত্সায় বিশাল ব্যবধানের জন্য এই জরিমানা করা হয়েছে।

পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, রাজ্য সরকার নিকাশি এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপনকে মোটেও অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। অথচ, রাজ্য বাজেটে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে নগরোন্নন এবং পৌর সংক্রান্ত বিষয়ে ১২,৮১৮.৯৯ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা রয়েছে।

উদ্ভূত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো থেকে দীর্ঘ ভবিষ্যতে পিছনো যাবে না বলে পর্যবেক্ষণের পর জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারপার্সন বিচারপতি একে গোয়েলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, দূষণমুক্ত পরিবেশ সরবরাহ করা রাজ্য এবং স্থানীয় সংস্থাগুলোর সাংবিধানিক দায়িত্ব।

পরিবেশ আদালত উল্লেখ করেছে, শহর এলাকায় প্রতিদিন ২,৭৫৮ মিলিয়ন লিটার বর্জ্য উৎপাদিত হয়। তার মধ্যে ১,৫০৫.৮৫ এমএলডি (৪৪টি এসটিপি স্থাপন করে) শোধন করার বদলে শুধুমাত্র ১,২৬৮ এমএলডি শোধন করা হয়েছে। যার ফলে, ১,৪৯০ এমএলডি বর্জ্যের বিশাল ব্যবধান রয়ে গিয়েছে।

পরিবেশ আদালত বলেছে, এটা জীবনের অধিকারের অংশ। এটা মৌলিক মানবাধিকার, রাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ দায়বদ্ধতা। তহবিলের অভাব দেখিয়ে এই অধিকারকে কোনওমতেই অস্বীকার করা যায় না। যদি কোনও কেন্দ্রীয় তহবিল নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি থাকে, তবে রাজ্য তার দায় এড়াতে পারে না। অথবা কোনও অজুহাতেই জনগণের অধিকার বিলম্বিত করতে পারে না।

এই প্রসঙ্গে বেঞ্চ বলেছে, ‘প্রাপ্য পরিবেশের ক্ষতি বিবেচনা করে, আমরা মনে করি যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভুল সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি, অতীতের ভুলের জন্য রাষ্ট্রকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কঠিন এবং তরল বর্জ্যর জন্য ক্ষতিপূরণের চূড়ান্ত পরিমাণ ৩,৫০০ কোটি টাকা। যা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দুই মাসের মধ্যে একটি পৃথক রিং-ফেন্সড অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।’

ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে যে, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরিবেশগত নিয়ম মেনে চলাকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। কঠিন এবং তরল বর্জ্য শোধনের জন্য অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের অভাবেই গুরুতর অবহেলা এবং ক্রমাগত পরিবেশের ক্ষতির এই মামলা ট্রাইব্যুনালে এসেছে। আমরা মনে করি যে সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে ট্রাইব্যুনালে চিহ্নিত এবং পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে যে রাষ্ট্র আইন এবং নাগরিকদের প্রতি তার কর্তব্য উপলব্ধি করে নিজস্ব স্তরে আরও পর্যবেক্ষণ এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।’

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা